উৎপল মণ্ডল,শ্যামনগর
ঘুর্ণিঝড় রিমাল এর তান্ডবে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাভুক্ত এলাকাসমুহে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২৮ মে(মঙ্গলবার) সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, বন্যপ্রাণী ও জীবজন্তুর প্রাণহানীর বিষয়ে ২৪ ঘন্টা পরও সুস্পষ্ট তথ্য না মিললেও গাছ-গাছালির ব্যাপক ক্ষতির দাবি করেছে বনবিভাগ। এছাড়া রেঞ্জ অফিসসহ টহলফাঁড়ি এবং স্টেশন অফিসের পাশাপাশি বনের মধ্যে গড়ে তোলা রিং বাঁধ ও মিষ্টি পানির পুকুরগুলো সম্পুর্নভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। বনবিভাগ সুত্র জানায় রবিবার রাতে রিমাল আঘাত করলেও সুন্দরবনের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। তবে সোমবার দুপুরের দিকে উচ্চ জোয়ারের পাশাপাশি তীব্র ঝড়ো বাতাসের কারনে গাছ-গাছালির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বনবিভাগ সুত্র আরও জানা যায় বঙ্গপোসাগর সংলগ্ন হলদেবুনিয়া, মান্দারবাড়িয়া, কাছিকাটা, পুষ্পকাটি টহলফাঁড়িসহ এসব এলাকার যাবতীয় মিষ্টি পানির পুকুর সম্পুর্নভাবে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার টহলফাঁড়িগুলোসহ বিভিন্ন স্টেশনের আটটি জেঠি(পল্টুন) সম্পুর্নভাবে বিধ্বস্থ হয়েছে। এছাড়া বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন অফিসের প্রায় পাঁচশ মিটারসহ অপরপর স্টেশন ও টহল অফিসের আরও প্রায় সাতশ মিটার রিং বাঁধ সম্পুর্নভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। বনবিভাগ সুত্রগুলো জানায় জলোচ্ছাসের সময় প্রাণীদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বিগত দিনে পশিম সুন্দরবনে চারটি বাঘের কেল্লা নির্মান করা হয়। রিমাল এর প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছসের সময় এসব কেল্লাসমুহে আশ্রয় নেয়ার কারনে হয়তবা বন্যপ্রাণীদের জীবন রক্ষা পেয়েছে। এছাড়া বন্যপ্রাণীদের জন্য খাবার পানির অভাব পুরণের জন্য সুন্দরবনের মধ্যে ১৫টি পুকুর খনন করা হলেও তার সবগুলো সম্পুর্নভাবে তলিয়ে যাওয়ায় সুন্দরবনের প্রাণীকুলের জন্য সামনের দিনগুলোতে খাবার পানির অভাব প্রকট হতে পারে। সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী জানান জলোচ্ছসে কোন প্রাণীর মুত্যর প্রমান সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় মেলেনি। তবে লোকালয়ে ভেসে আসা তিনটি হরিণ কলাগাছিয়া টহলফাঁড়িতে নিয়ে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। গাছ-গাছালির ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি অদ্যবধি নিরুপন করা না গেলেও অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় দেড় কোটি টাকা। দু’একদিনের মধ্যে বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির স্পষ্ট ধারনা পাওয়া যাবে বলেও তিনি জানান ।

