নিজস্ব প্রতিবেদক
অভয়নগরের মিল শ্রমিক কেয়া খাতুনকে এসিড নিক্ষেপ ও হত্যার দায়ে সহকর্মী শামীম হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে যশোরের একটি আদালত। বৃহস্পতিবার যশোরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র বিচারক শেখ নাজমুল আলম এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত শামীম হোসনে অভয়নগরের জাফরপুর গ্রামের খন্দকার মোশারফ হোসেনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এম ইদ্রিস আলী। দণ্ডপ্রাপ্ত শামীম হোসেন কারাগারে আটক। মামলার অভিযোগে জানা গেছে, কেয়া খাতুন এক যুগ আগে স্বামী পরিত্যাক্ত হয়ে একটি মেয়ে নিয়ে তার মামার বাড়ি অভয়নগরের কাদিরপাড়া গ্রামে বসবাস ও আকিজ গ্রুপের এসএএফ লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে শ্রমিক পদে চাকরি করতো। আসামি শামীম হোসেন তার দুর সম্পর্কীয় আত্মীয় হয়। কেয়া খাতুন এবং আসামি শামিম হোসেন দুইজনেই অভয়নগরের তালতলাস্থ আকিজ গ্রুপের এসএএফ লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে শ্রমিক পদে চাকরি করতো। মিলের কাজ করার সুবাদে কেয়া খাতুনকে আসামি শামীম প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিতো। কেয়া খাতুন তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র শুরু করে শামীম। ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর কেয়া ও আসামি শামীম দিনের বেলায় মিলে কাজ করছিল। দুপুরে কেয়া মিলের ক্রাস্ট ইউনিটের ভিতরে খাওয়া-দাওয়া শেষে বিশ্রাম নিচ্ছিলো। এ সময় শামীম সেখানে গিয়ে কেয়াকে বিভিন্ন ধরণের কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করছিলো। কেয়া তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শামীমের হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের মগে রাখা এসিড গায়ে ঢেলে দেয়। কেয়া চিৎকার দিলে শামীম পাশে থাকা লোহার পাইপ দিয়ে মারপিট করে গুরুত জখম করে শামীম পালিয়ে যায়। কেয়ার চিৎকারে মিলের অন্যান্য শ্রমিকরা এসে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় নিহত কেয়ার মামলা মামা লুৎফর রহমান মজুমদার বাদী হয়ে এসিড নিক্ষেপ ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শামীমকে আসামি করে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় আসামি শামীমকে অভিযুক্ত করে ২০২২ সালের ১১ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জয়ন্ত সরকার। দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি শামীম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন।

