১৮ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

একাদশে ভর্তি: ১০ দিনে ১১ লাখ শিক্ষার্থীর আবেদন

প্রতিদিনের ডেস্ক॥
এবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করতে পদে পদে ভোগান্তির মুখে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। সার্ভার জটিলতা কাটিয়ে উঠলেও পেমেন্ট নিয়ে এখনো ভুগতে হচ্ছে ভর্তিচ্ছুদের। ভোগান্তির মধ্যেও আবেদন শুরুর পর ১০ দিনে প্রায় ১১ লাখ শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে আবেদন করেছেন। তবে সবশেষ দুদিনে আবেদন করার হার খুবই কম।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান।
তার দেওয়া তথ্যমতে, বুধবার (৫ জুন) দুপুর ১২টা পর্যন্ত আবেদন করেছেন ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৬৬৩ জন। আবেদনকারীরা সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ পছন্দ করার সুযোগ পেয়েছেন। তারা মোট ৫৯ লাখ ৮০ হাজার ৬৯০টি পছন্দক্রম জমা দিয়েছেন।
আবেদন করা ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৬৬৩ জনের মধ্যে সফলভাবে ফি পরিশোধ করেছেন ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৬৫১ জন। এর আগে গত ৩ জুন রাত ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত আবেদন জমা পড়েছিল ১০ লাখ ১৮ হাজার ৭৫০টি। সেই হিসাবে গত দুই দিনে মাত্র ৭৮ হাজার শিক্ষার্থী নতুন করে আবেদন করেছেন।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলছেন, সার্ভার ও পেমেন্ট জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে আবেদন করতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। অনেকে অনলাইনে আবেদন করতে না পেরে ঢাকা বোর্ডে সরাসরি ধরনা দিচ্ছেন। এজন্য এবার এখনো আবেদন জমা পড়ার সংখ্যা তুলনামূলক কম।
যদিও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দাবি, আবেদন করার ক্ষেত্রে এখন আর কোনো জটিলতা নেই। অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা আগে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দিয়েছি। এরপর ধীরে ধীরে পেমেন্ট হচ্ছে। ভালোভাবেই আবেদন কার্যক্রম চলছে। খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না।’
গত ১২ মে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। এতে সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার শিক্ষার্থী। তবে এবার সারাদেশে কলেজ ও আলিম পর্যায়ের মাদরাসায় ২৫ লাখ আসন রয়েছে। সেই হিসাবে সব শিক্ষার্থী ভর্তির পরও প্রায় সাড়ে ৮ লাখ আসন খালি থাকবে।
নানা জটিলতায় একাদশে ভর্তিচ্ছুরা আবেদন করতে পারছেন না। জটিলতার সমাধান পেতে প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা সশরীরে ঢাকা বোর্ডে ভিড় জমাচ্ছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই অভিযোগ, কে বা কারা আগেই তাদের রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে আইডি খুলে আবেদন করে ফেলেছেন।
বুধবার বোর্ডে এসেছেন ইশতিয়াক হাসান নামের একজন শিক্ষার্থী। তিনি জানান, প্রথম দিন থেকে টানা তিনদিন চেষ্টা করেও তিনি আবেদন করতে পারেননি। এরপর কে বা কারা তার রোল নম্বর দিয়ে আইডি খুলে অপরিচিত কলেজ পছন্দক্রম নিয়ে আবেদন করে ফেলেছেন। তিনি ওইসব কলেজে ভর্তি হতে চান না।
ইশতিয়াক বলেন, ‘এবারের সিস্টেমটা এমন যে একজন চাইলেই কোনো শিক্ষার্থীর রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে আইডি খুলে আবেদন করে ফেলতে পারছেন। অনেক কলেজ না কি শিক্ষার্থী পায় না। তারা অনেক ভালো রেজাল্টধারী শিক্ষার্থীদের নামে গোপনে নিজেরা আবেদন করে দিচ্ছেন। আমিও একই সমস্যায় পড়েছি। বোর্ড থেকে বলেছে আমাকে নতুন করে আবেদন ও কলেজ পছন্দের সুযোগ দেওয়া হবে।’
বোর্ড সূত্র জানায়, পিন কোড ও মোবাইল নম্বর পরিবর্তনের জন্য অনেক শিক্ষার্থী বোর্ডে সশরীরে আসছেন। তাদের ৪০৩ ও ৪০৭ নম্বর কক্ষে যথাক্রমে সাগর দে ও সুশান্ত রাহার সঙ্গে যোগাযোগ করতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যে কোনো কোটার ক্ষেত্রে ৪০৩ ও ৪০৯ নম্বর কক্ষে লোকমান মুন্সী ও তুষার বাড়ৈর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আর যে কোনো ভুয়া আবেদন বা একজনের আবেদন আরেকজন করলে ৪১২ নম্বর কক্ষে অসীম সমাদ্দার দিচ্ছেন সমাধান।
৩ ধাপে আবেদন ও ফল প্রকাশ
প্রথম ধাপে আবেদন শুরু হয়েছে ২৬ মে, যা চলবে ১১ জুন রাত ৮টা পর্যন্ত। এ ধাপের ফল প্রকাশ হবে ২৩ জুন রাত ৮টায়। দ্বিতীয় ধাপে ৩০ জুন আবেদন শুরু হয়ে চলবে ২ জুলাই পর্যন্ত। আর ফল প্রকাশ হবে ৪ জুলাই রাত ৮টায়। এছাড়া তৃতীয় ধাপে ৯ ও ১০ জুলাই আবেদন নিয়ে ১২ জুলাই ফল প্রকাশ করা হবে।
তিন ধাপে আবেদনের পর ফল প্রকাশ, নিশ্চায়ন ও মাইগ্রেশন শেষে ১৫ জুলাই থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। ভর্তি কার্যক্রম শেষে ৩০ জুলাই সারাদেশে একযোগে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়