১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি

আওয়ামী লীগ সরকারের চতুর্থ মেয়াদের প্রথম বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে তিনি নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেছেন। এ বাজেট আমাদের অর্থনীতির কলেবর বৃদ্ধি, জাতীয় ব্যয় বৃদ্ধিরই প্রতিফলন। বাজেটে নির্ধারিত ব্যয়ের অঙ্ক যত বড় হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং উন্নয়ন প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন ততই বড় চ্যালেঞ্জ। বাজেটে রাজস্ব আয়সহ মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা; বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়া হবে। ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ইতোমধ্যে অনুমোদন করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী হিসেবে মাহমুদ আলী এবারই প্রথমবারের মতো বাজেট উপস্থাপন করছেন। বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। আর সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যদিও এখন সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ ঋণাত্মক রয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমেছে। অর্থবছরে রাজস্ব আয় বেশ খানিকটা বাড়াতে চায় সরকার। বাড়তি এ রাজস্ব সংগ্রহে থাকছে নতুন কিছু কৌশল। মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের অতি প্রয়োজনীয় অনেক পণ্য ও সেবায় শুল্ককর বাড়ানো হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে আরোপ করা হচ্ছে নতুন বাধ্যবাধকতা। তবে শুধু মধ্যবিত্ত নয়, নিম্ন ও উচ্চবিত্তদের ওপরেও নানা ক্ষেত্রে বাড়ছে করের চাপ। এবার সংসদ সদস্যদের আমদানি করা গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানো হয়েছে। বর্তমানে জাতীয় সংসদের সদস্যরা কোনো শুল্ককর ছাড়াই গাড়ি আমদানি করতে পারেন। ৩৬ বছর ধরে এই সুবিধা পেয়ে আসছেন তারা। আগামী অর্থবছরে ১১টি ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে রূপান্তরিত করতে এসব কার্যক্রমকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেয়া হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা; মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা উন্নত ও সম্প্রসারিতকরণ; জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ; জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিতামূলক, দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ে তোলা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখা। পদক্ষেপগুলো সময়োপযোগী বলে মনে করছি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরটি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ও বর্তমান সরকারের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সরকার তাদের ঘোষিত উন্নয়ন রূপকল্প বাস্তবায়নের একটা বিশেষ পর্যায়ে রয়েছে। বিশালাকার এই বাজেটকে বলা হচ্ছে উচ্চাভিলাষী বাজেট। তবে বাজেট উচ্চাভিলাষী কিনা সেটা নির্ভর করে বাস্তবায়ন সক্ষমতার ওপর। বাজেট উচ্চাভিলাষী হবে না যদি এই বাজেট বাস্তবায়নের জন্য উপযুক্ত কর্মসূচি, পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টা থাকে। বাজেটে কিছু কার্যকর ঘোষণা থাকা দরকার, যা বাজারে ইতিবাচক বার্তা দেয়। মূল্যস্ফীতি যাতে আর না বাড়ে তার জন্য বাজারব্যবস্থায় সুশাসন জরুরি।সরকার তার প্রতিশ্রæতি পূরণের বাজেট বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়