খুলনা প্রতিনিধি॥
ক্রেতার কাছে মাংস বিক্রিতে ব্যস্ত খুলনার একজন পেশাদার কসাই। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তোলা ছবি ঈদুল আজহায় খুলনায় কোরবানির মাংস কাটাকাটির ক্ষেত্রে পশুর দামের ২০ শতাংশ দিয়েও মিলছে না পেশাদার কসাই। তারা নিজস্ব দোকানে ব্যস্ত থাকবেন মাংস বিক্রির জন্য। এ কারণে বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা অপেশাদার কসাইদের সঙ্গে ইতোমধ্যে যারা পশু কিনেছেন তারা চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ফলে যারা এখনো পশু কিনতে পারেননি তারা পড়েছেন বিপাকে। খুলনা নগরীর বিভিন্ন মাংসের দোকানগুলোতে ঈদ উপলক্ষে নানা প্রস্তুতি চলছে। শুধু দোকান নয়, কয়েকটি উম্মুক্ত স্থানেও বিক্রি হবে গরুর মাংস। যারা কোরবানি দিতে পারছেন না তারা যাতে মাংস কিনে খেতে পারেন সে জন্য গরু জবাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পেশাদার কসাইরা। খুলনা নগরীর খালিশপুর নতুন রাস্তা এলাকার কসাই খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমি প্রতি শুক্রবার একটি করে গরু জবাই করি। ঈদের জন্য তিনটি গরু জবাই করবো। ঈদের দিন পর্যন্ত মাংস বিক্রি চলবে।’ নিরালা দীঘির পাড় এলাকার পেশাদার কসাই ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘আগে খুলনার উম্মুক্ত স্থানে বেশ কয়েকটি গরু জবাই দেওয়া হতো। এখন মাংসের দোকানের সংখ্যা বেড়েছে। তাই গরু জবাই দেওয়া হয় কম। তবে ঈদের আগের দিন থেকে মাংসের দোকানগুলো জমজমাট হবে।’ অন্যান্য দিনগুলোতে এক থেকে দুইটি গরু জবাই হলেও কোরবানি উপলক্ষে ৩ থেকে ৫টি গরুর মাংস বিক্রি করার কথা জানান খুলনার বৃহত্তম মাংসপট্টি ময়লাপোতার কসাই রাজন। তিনি বলেন, ‘যাদের কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য থাকে না, তারাই মাংস কিনতে আসেন।’ আশিক মিটশপের আশিকুর রহমান বলেন, ‘ঈদের আগের দিন থেকে শুরু হয় মাংস বিক্রি। চলে ঈদের দিন বিকেল পর্যন্ত। কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার জন্য প্রতি হাজারে ২০০ টাকা দিয়েও কসাই পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কয়েকজন। গ্রাম থেকে আসা অপেশাদার কসাইরা একটি গরুর মাংস কেটে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেন বলেও জানান তারা। তাদের অভিযোগ, অপেশাদার কসাইরা পশুর মাংস কাটতে গিয়ে নানা ধরনের ভুল করেন। কোরবানির ঈদে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আশিক কসাই বলেন, আমি ঈদের দিনের জন্য তিনটি গরুর মাংস কাটার অর্ডার পেয়েছি। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত শতকরা (গরুর দামের ওপর নির্ভর) ২০ টাকা মজুরিতে মাংস কাটবো। সকাল ১১ টার পর থেকে শতকরা ১৫ থেকে ১০ টাকা নেব মাংস কাটার জন্য। মূলত আমি সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রতি লাখে ২০ হাজার টাকা মজুরি নেব। ১১ টার পরে নেব লাখে ১৫ হাজার টাকা। ঠিকাদার মুসলিম হোসেন বলেন, ‘চাঁদরাতে হাট থেকে গরু কিনবো। এখনো কসাই খুঁজে পাইনি। অপেশাদার কসাইরা ভরসা। হায়দার আলী নামে একজন বলেন, প্রতি লাখে ২০ হাজার টাকা কসাইকে দেওয়াটা আমাদের জন্য কষ্টদায়ক। কসাইদের গরুর মাংস কাটার মজুরি নির্ধারণে সহনশীল হওয়া উচিত। নইলে বিষয়টি পীড়াদায়ক হতে পারে।বাইতিপাড়া এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ মোশতাক আলী জানান, এখনো গরু কেনা হয়নি। হাটে থেকে গরু আনার পর কসাই খোঁজা শুরু হবে। প্রথম পছন্দ থাকবে পেশাদার কসাই। তারা খুব দ্রুত কাজ শেষ করতে পারে। তাদের সঙ্গে দাম পুষালে চুক্তি করবো। যদি না হয়, তাহলে অপেশাদার কসাই দিয়ে পশুর মাংস কাটতে হবে। সেক্ষেত্রে সময় অনেক বেশি লাগবে।