চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি॥
চুয়াডাঙ্গায় ৬টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির অভিযোগে আন্তঃজেলা চোরচক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ট্রান্সফরমারের কিছু অংশ বিশেষসহ চোরাই কাজে ব্যবহৃত উপকরণ জব্দ করা হয়েছে। শুক্রবার (১৪ জুন) বেলা ১১টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলার পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়টি জানান। এরআগে চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা ও কুষ্টিয়ায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন – দামুড়হুদা উপজেলার শিবনগর গ্রামের মৃত আজমত আলীর ছেলে আজগর আলী (৩৫), চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা থানার হুদাপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে নায়েব আলী (২৬), কুষ্টিয়া দৌলতপুর থানার তাজপুর গ্রামের হায়েত আলীর ছেলে সেলিম (৩৫), কুষ্টিয়া কুমারখালী থানার বানিয়াপাড়ার মৃত সোরামত আলীর ছেলে বাবু (৫৫), কুষ্টিয়া পারখাদা উত্তরপাড়ার মৃত আ. কাদেরের ছেলে রঞ্জু আহমেদ (৪২), কুষ্টিয়া কুমারখালী থানার বারাদি গ্রামের আসলাম উদ্দীনের ছেলে সোহেল (৩২) এবং নাটোর গুরুদাসপুর থানার শ্যামপুর গ্রামের রশিদ বেপারীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৭)। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান বলেন, গত ২৬ মে দামুড়হুদা উপজেলার চারুলিয়া গ্রামের দক্ষিণ মাঠ থেকে গভীর সেচ প্রকল্পের তিনটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। এ বিষয়ে শফিকুল ইসলাম (৪৭) বাদী হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়া গত ৫ জুন দামুড়হুদা উপজেলার পীরপুরকুল্লা গ্রামে গালকাটি মাঠ থেকে গভীর সেচ প্রকল্পের তিনটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের তামার কয়েল চুরি হয়। এ বিষয়ে আব্দুল কাদের (৬৩) দামুড়হুদা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিরবিচ্ছিন্ন অভিযান চালিয়ে গত বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় দামুড়হুদা এলাকা থেকে চুরির ঘটনায় জড়িত আজগর আলীকে আটক করা হয়। আজগর আলীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সেলিম, বাবু ও রফিকুল ইসলামকে আটক করা হয়। আটককৃত আসামিদের দেয়া তথ্য অনুসারে কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে রঞ্জু ও সোহেলকে আটক করা হয় এবং তাদের হেফাজতে থাকা চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের তামার কয়েল উদ্ধার করা হয়। এরপর দামুড়হুদা থানা এলাকায় আবার অভিযান চালিয়ে নায়েব আলীকে আটক করা হয়। গ্রেফতার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ট্রান্সফরমারের ভিতরে থাকা তামার তার/কয়েল চুরি করে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন জায়গায় তারা বিক্রয় করে। কুষ্টিয়া থেকে পরবর্তীতে ঢাকায় এসব পণ্য বিক্রয় করা হয়। তামার তার/কয়েল রিফেয়ারিং করে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও ফ্যানসহ বিভিন্ন তামার জিনিস তৈরি হয়। একটি ট্রান্সফরমারের বাজার মূল্য ৬৭ হাজার টাকা। প্রতিটি ট্রান্সফরমারের মধ্যে প্রায় ১৫ লিটার তেল এবং ছয় থেকে সাত কেজি তামার তার থাকে। পুলিশ সুপার আরও বলেন, মামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।