কামরুজ্জামান মুকুল, বাগেরহাট
বাগেরহাটের শরনখোলায় পার্শ্ববর্তী সুন্দরবন থেকে নদী সাঁতরে লোকালয়ে আসা দুইটি চিত্রা হরিণ বনে ফিরিয়ে দিয়েছে গ্রামবাসী। এর মধ্যে একটি হরিণ ধরে রেখে পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বনে অবমুক্ত করা হয়। অপরটি নিজেই নদী পার হয়ে বনে ফিরে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবনসংলগ্ন দক্ষিণ চালিতাবুনিয়া গ্রামে ঢুকে পড়েছিল হরিণ দুইটি। সুন্দরবন সংলগ্ন অভিজ্ঞজনরা জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর সুন্দরবনে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। বনের ডোবা-নালায় জলোচ্ছাসের পানি আটকে তাতে প্রচুর পরিমাণে মশা জন্ম নিয়েছে। মাশার কামড়ে বনরক্ষীরাই টিকতে পারছে না। ধারণা করা হচ্ছে মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে হরিণ দুইটিও লোকালয়ে চলে আসে। বনবিভাগও একই কথা বলছেন। সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট ওয়াইল্ড টিমের শরণখোলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠ কর্মী আলম হাওলাদার শুক্রবার সকালে জানান,রাতে হরিণ দুটি বগী-শরণখোলা ভারাণী নদী সাঁতরে দক্ষিণ চালিতাবুনিয়া গ্রামের শাহ আলমের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে ওয়াইল্ড টিম ও ভিলেজ টাইগার টিমের (ভিটিআরটি) সদস্যসহ গ্রামবাসী মিলে একটি হরিণ ধরা হয়। সেটি পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের বগী স্টেশনের বনরক্ষীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অন্যটিকে ধরার চেষ্টা করলে সেটি নিজেই নদী সাঁতরে ওপারে (বনে) চলে যায়। স্ত্রী হরিণ দুইটির বয়স আনুমানিক এক বছর হবে। পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান বলেন, রাতের অন্ধকারে নদী সাঁতরে দুইটি হরিণ বনের পাশের গ্রামে চলে যায়। হরিণ দুইটিকে স্থানীয়দের সহযোগীতায় বনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বনের ডোবা-নালায় পানি জমে আছে। ঝড়ের পর বৃষ্টি না হওয়া এবং জোয়ারের পানি প্রবেশ না করায় সেই বদ্ধ পানিতে প্রচুর পরিমাণে মশার জন্ম হয়েছে। মশার উৎপাতে আমরাই টিকতে পারছি না। ধারণা করা হচ্ছে হরিণ দুইটিও মশার কামড়ে টিকতে না পেরে লোকালয়ে চলে গিয়েছিলো। তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে বনের হরিণ বা অন্য কোনো বন্যপ্রাণি লোকালয়ে গেলে তাদের না মেরে যাতে নিরাপদে বনে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। তাছাড়া লোকালয় সংলগ্ন বন অফিসগুলোর বনরক্ষীদেরও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।