১৬ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৩০শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

সমাধান হোক দীর্ঘদিনের সমস্যার

দীর্ঘ সময় ধরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির অপেক্ষায় থেকে বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে তিস্তাপাড়ের জনগণ ভারতের অনৈতিক আচরণে অনেক বেশি হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তবে এবার তিস্তা মহাপরিকল্পনায় ভারতের অংশগ্রহণের আগ্রহ বাংলাদেশের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। আবার চীনের প্রাথমিক সমীক্ষার পর এই আগ্রহকে ভারতের ভূরাজনৈতিক খেলা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। ভারত সফরের পর জুলাইয়ে চীন যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরই বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। প্রকল্পের ব্যাপারে চীন কী অবস্থান নেয়, তার ওপরেই নির্ভর করবে এই প্রকল্পের ব্যাপারে বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে কীভাবে ভারসাম্য রক্ষা করবে। গত মঙ্গলবার দুপুরে গণভবনে ভারত সফর নিয়ে করা এক সংবাদ সম্মেলনে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভারত ও চীন দুই দেশই প্রস্তাব দিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এর মধ্যে যে প্রস্তাব বেশি গ্রহণযোগ্য, লাভজনক হবে, আমরা সেটিই নেব। তিনি বলেন, আমরা তিস্তা প্রকল্প নিয়েছি। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চীন ও ভারত আলাদা আলাদা প্রস্তাব দিয়েছে। আমাদের দেশের জনগণের জন্য কোন প্রস্তাবটি অধিক লাভজনক ও উপযোগী হবে সেটাই আমরা নেব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিস্তা প্রকল্পে কোন প্রস্তাবটা নিলে কতটুকু ঋণ নিলাম ও কতটুকু আমাদের পরিশোধ করতে হবে, কতটুকু দিতে পারব- এসব কিছু বিবেচনা করেই আমাদের পরিকল্পনা নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে ভারত যেহেতু বলেছে তারা করতে চায় এবং টেকনিক্যাল গ্রুপ পাঠাবে, তারা অবশ্যই আসবে। আমরা যৌথভাবে সেটা দেখব। তিনি বলেন, চীন একটা সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে। ভারতও করবে। এটার পর আমাদের কাছে যেটা সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য ও লাভজনক মনে হবে আমরা সেটাই করব। যেহেতু ভারতের কাছে আমাদের তিস্তার পানির দাবিটা অনেক দিনের; সে ক্ষেত্রে ভারত যদি আমাদের তিস্তা প্রকল্পটি করে দেয়- তবে আমাদের সব সমস্যারই সমাধান হয়ে যায়। কাজেই ভারত যখন এগিয়ে এসেছে, আমরা এটাই মনে করি- ভারতের সঙ্গে যদি আমরা এই তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করি তাহলে আমার দেশের পানি নিয়ে প্রতিদিন সমস্যায় পড়তে হবে না। আমরা সেই সুবিধাটা পাব। তিস্তা প্রজেক্ট নিয়ে ভারতের সঙ্গে, পুরো নদীটা ড্রেজিং করা, পাড় বাঁধানো, পানি সংরক্ষণ সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এরপর এখানে টেকনিক্যাল গ্রুপ আসবে, কথা বলবে, আলোচনা করবে, তারপর সমঝোতা হবে। সত্যি বলতে, একবার এই পরিকল্পনা সফল হতে চললে ভাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশের কৃষি, সেচ, নৌ-চলাচল এবং মৎস্যসম্পদ আহরণে ব্যাপক ক্ষতিসাধন রোধ করা সম্ভব হবে। নদীতে প্রয়োজনীয় পানি না থাকায় আর্থসামাজিক জীবনে এবং প্রাণ-প্রকৃতিতে যে ভয়ানক বিপর্যয় নেমে আসে তা লাঘব করা যাবে। ২৫ বছর ধরে ঝুলে থাকা একটি সমস্যার সমাধান হবে। আমরা সবাই চাই এই মহাপরিকল্পনা দেশের স্বার্থ রক্ষা করে বাস্তবায়িত হোক এবং দীর্ঘদীনের এই সমস্যার অবসান হোক।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়