১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

বেনজীর তুরস্ক,পর্তুগাল ও পাপুয়াসহ ৩ দেশের পাসপোর্টের মালিক

প্রতিদিনের ডেস্ক॥
বেনজীর আহমেদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছিল সাতটি। মজার ব্যাপার হল, এই সাতটি পাসপোর্টের কোনটিই সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে করা হয়নি। সবগুলোতেই তিনি বেসরকারি চাকরিজীবী হিসেবে পাসপোর্ট নিয়ে ছিলেন। সর্বশেষ তার যে পাসপোর্ট করা হয়েছিল সেখানে তিনি বেসরকারি চাকরিজীবী হিসেবে পাসপোর্ট নবায়ন করেছিলেন, যেটি তাকে পাসপোর্ট অধিদপ্তর দিয়েছিল, যখন তিনি পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন সেই সময়। সেই বেনজীর আহমেদের শুধু দেশেই একাধিক পাসপোর্ট নয়, বিদেশেও অন্তত তিনটি দেশের পাসপোর্ট রয়েছে বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ তুরস্ক, পর্তুগাল এবং পাপুয়া নিউগিনির পাসপোর্ট গ্রহণ করেছেন এবং তিনটি পাসপোর্ট তার সঙ্গে রয়েছে। শুধু বেনজীর নয়, তার পরিবারের সদস্যদেরও এই তিনটি দেশের পাসপোর্ট রয়েছে বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য যে, সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়ে এখন পলাতক জীবনযাপন করছেন। তিনি কোথায় অবস্থান করছেন এই সম্পর্কে নানারকম গুঞ্জন থাকলেও এখন মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গেছে তিনি তুরস্কে অবস্থান করছেন। গত এপ্রিলে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। প্রথমে তিনি সিঙ্গাপুর যান। সেখানে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তার স্ত্রীর চিকিত্সা করেন। সেখান থেকে বেনজীর আহমেদ লন্ডনে গিয়েছিলেন। লন্ডনে তিনি কয়েকদিন অবস্থানের পর এখন তুরস্কে অবস্থান করছেন। বেনজীর আহমেদ ২০২১ সালে তুরস্কের পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। তুরস্কের বিজনেস ক্যাটাগরিতে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১০ কোটি টাকা দিয়ে তুরস্কের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন এবং ওই দেশের পাসপোর্ট নিয়েছেন। এছাড়াও তিনি বিজনেস ক্যাটাগরিতে পর্তুগালের পাসপোর্টও নিয়েছেন। পর্তুগালেও বিপদ অঙ্কের টাকা দিয়ে সেদেশের পাসপোর্ট গ্রহণ করা যায়। আর ট্যাক্স হেভেন হিসেবে পরিচিত পাপুয়া নিউগিনির পাসপোর্ট গ্রহণ করেছিলেন। তিনি অনেক আগেই। জানা গেছে, যখন বেনজীর আহমেদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ছিলেন, সেই সময়ে তিনি পাপুয়া নিউগিনির পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। বেনজীর আহমেদের এই তিনটি দেশের পাসপোর্ট থাকা নিয়েও এক ধরনের প্রতারণা এবং জালিয়াতি হয়েছে বলে বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে জানা গেছে। বিশেষ করে তিনি তুরস্কের যে পাসপোর্ট গ্রহণ করেছেন সেখানে তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তার ব্যবসায়িক আর্থিক যে হিসাবগুলো তিনি দিয়েছেন সেই সব হিসাবগুলো বানোয়াট এবং ভুল ছিল। তবে তিনি তুরস্কে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২১০ কোটি টাকা জমা দিয়েছিলেন এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। পর্তুগালের পাসপোর্ট তিনি কিভাবে পেয়েছেন সে সম্পর্কে কোন ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে একাধিক সূত্র বলছে, র‌্যাবের মহাপরিচালক থাকা অবস্থাতেই তিনি পাপুয়া নিউগিনির পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি দুবার পর্তুগাল সফর করেছিলেন। বেনজীর আহমেদের বিদেশ হিসাব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, তিনি সরকারি প্রজ্ঞাপনের বাইরে একাধিকবার বিদেশ গেছেন। ডিএমপির কমিশনার, র‌্যাবের মহাপরিচালক এবং পুলিশপ্রধান- এই তিনটি পদে থাকাকালীন তিনি সরকারি পরিচয় গোপন করে এবং সরকারের অনুমোদন না নিয়ে বিদেশে গেছেন। এখন তার তিন দেশের পাসপোর্টের মধ্যে তিনি কোন দেশের পরিচয় ব্যবহার করবেন সেটি দেখার বিষয়।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়