প্রতিদিনের ডেস্ক॥
খুনের নীলনকশা জেনেও পুলিশ ব্যবস্থা নিল না কেন, পুলিশ কী করে। তাদের কী কোনো দায়িত্ব নেই– এমন প্রশ্ন তুলেছেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।রবিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।পুলিশের সমালোচনা করে হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, “এই দেশে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যরা মারা গেছেন। আমার হবিগঞ্জের শাহ এএমএস কিবরিয়া সাহেব মারা গেছেন। কোনো প্রটেকশন দিতে পারি নাই।”
“এখন পুলিশের ভূমিকা দেখে আমার মনে হচ্ছে, পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করার জন্য বসে আছে। না হলে এই পর্যায়ে যাবে কেন?” বলেন তিনি।
এর আগে নিজের প্রাণনাশের আশঙ্কায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন ব্যারিস্টার সুমন।
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, “সম্প্রতি আমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমাকে ফোন দেন। আমি তার সঙ্গে দেখা করি। দেখা হলে তিনি আমাকে তার মোবাইলে থাকা একটি ক্ষুদে বার্তা দেখান। এরপর ওই বার্তায় থাকা একটি নম্বরে কল দেন। কল দিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। যার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন তিনি একজন পেশাদার খুনি। ওই পেশাদার খুনি আমাকে বলেন, আমার বাড়ি সিলেটে। আমি আপনার সম্পর্কে জানি। আপনাকে খুনের পক্ষে আমি না।”
সুমন আরও বলেন, “যার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে তিনি আমাকে খুনের পক্ষে না। কিন্তু আমার বক্তব্য হচ্ছে আমাকে খুনের নীলনকশা পুলিশ জানলেও তারা ব্যবস্থা নিল না কেন? আমাকে কেন জিডি করতে হলো। পুলিশ কী করে। তাদের কি কোনো দায়িত্ব নাই। আমি তো আর সাধারণ কোনো মানুষ না। একজন সংসদ সদস্য। আমাকে হত্যার হুমকির পরেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিল না। আমাকেই জিডি করতে হলো।”
হবিগঞ্জ-৪ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, “যখন আমার এলাকার ওসি জানলেন আমার লাইফ রিস্ক আছে, তখন তার উচিত ছিল এসপি এবং ডিআইজির সঙ্গে আলাপ করে এটা আসলেই থ্রেট নাকি ভোগাস তা তদন্ত করে বের করা। কিন্তু আমাকে জিডি করতে হলো কেন? তাদের উচিত ছিল আমাকে প্রটেকশন দেওয়া এবং জানানো, এটা রিয়েল নাকি ফেক। এখন আমার মনে হচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্র কি আদৌ আমাকে বাঁচিয়ে রাখতে চায় কি না, সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছি। এখন দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। মৃত্যুর ভয় আমি করি না। কিন্তু আমার এলাকার মানুষকে নিয়ে চিন্তা করি।”
এর আগে গত শনিবার রাতে ‘অজ্ঞাতনামা একটি শক্তিশালী মহল হত্যার জন্য টিম নিয়ে মাঠে নেমেছে’ জেনে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী ও সংসদ সদস্য।
শেরেবাংলা নগর থানায় করা সাধারণ ডায়েরিতে ব্যারিস্টার সুমন উল্লেখ করেন, গত ২৭ জুন ঢাকায় অবস্থানকালে রাত আনুমানিক ২টার সময় আমার নির্বাচনি এলাকার চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তার সরকারি মোবাইল ফোন থেকে আমার হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে বলেন যে, ‘আপনাকে হত্যার জন্য অজ্ঞাতনামা একটি শক্তিশালী মহল গত তিন দিন আগে চার-পাঁচ জনের একটি টিম নিয়ে মাঠে নেমেছে। আপনি রাতে বাইরে বের হবেন না এবং সাবধানে থাকবেন’। তখন আমি ওসির কাছে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি ওই ব্যক্তির পরিচয় জানাতে অস্বীকার করেন এবং আমাকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন। এই বিষয়টি জানার পর আমি মারাত্মকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।