১৮ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো জরুরি

রাজধানীর সড়কে কোনোভাবেই শৃঙ্খলা ফেরানো যাচ্ছে না। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী নির্দেশনা দিলেও দায়িত্বশীলরা এড়িয়ে চলছেন। গত মে মাসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোরভাবে বাস্তবায়নের জন্য বেশ কিছু সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। মন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়নি। মন্ত্রীর পক্ষে সম্প্রতি বিআরটিএ আবারো ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছে, আগামী ১ জুলাই থেকে পুরনো লক্কড়ঝক্কড় বাসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করবে। এই সময়ের মধ্যে তারা বাস মালিকদের এ ধরনের বাস সড়ক থেকে তুলে নিতে বলেছে। আগামী ১ জুলাইয়ের মধ্যে এ ধরনের ত্রæটিপূর্ণ মোটরযানকে ত্রæটিমুক্ত ও দৃষ্টিনন্দন করার জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় বিআরটিএ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। তা কতটা কার্যকর হবে, সেটা দেখার বিষয়। সড়কে অব্যবস্থাপনার করুণ পরিণতির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেপরোয়া বাস দুর্ঘটনায় কেউ হাত কিংবা পা হারাচ্ছে আবার কারো কোমর ভাঙছে। বিশেষ করে রাজধানীতে বাস চলাচল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে এই নৈরাজ্য চলতে দেয়া যায় না। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু একটি জাতীয় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানের জন্য সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানো এবং দুর্ঘটনাকেন্দ্রিক অপরাধের বিচার ও শাস্তি প্রদানের জন্য একটি কার্যকর ও ফলপ্রসূ আইনের প্রত্যাশা অনেক পুরনো। কিন্তু কোনো সরকার এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়েছে বলে মনে হয় না। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর অনুমোদন দিয়েছেন। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সংসদে সড়ক পরিবহন আইন পাস হলেও এখনো তা পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। দীর্ঘ এ সময়ে ঢাকা মহানগরীতে ট্রাফিক পুলিশ সীমিত আকারে আইনের প্রয়োগ করলেও সারাদেশে অনেকটা স্থবির অবস্থা রয়েছে। আইনের প্রয়োগে বাধা নিয়ে প্রভাবশালীদের ভূমিকা লক্ষণীয়। বিআরটিএও সহযোগী নয়। আমরা মনে করি, এই আইন বাস্তবায়ন করতে হলে মূলে হাত দিতে হবে। বিআরটিএ স্বচ্ছ হলে সড়ক-মহাসড়কে নৈরাজ্য প্রায় কমে আসবে। আধুনিক, মানসম্পন্ন ও নিরাপদ সড়ক পরিবহন যে কোনো দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নকেও গতিশীল করে। পরিবহন খাত এখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আঞ্চলিক যোগাযোগ ছাড়াও আন্তর্জাতিক অনেক বিষয় এখন পরিবহনে যুক্ত। তাই সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং এ জন্য সময়ের ধারাবাহিকতায় সড়ক পরিবহন আইনে যে বিষয়গুলো সংযোজিত হয়েছে, তার কঠোর বাস্তবায়ন জরুরি মনে করছি। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সমাধানের অযোগ্য কোনো বিষয় নয়। এ জন্য দরকার ইতিবাচক চিন্তা ও সমন্বিত পদক্ষেপ। এ জন্য পরিবহন মালিক, শ্রমিকদের পাশাপাশি যাত্রীদের সচেতন হতে হবে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগও নিশ্চিত করতে হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়