কামরুজ্জামান মুকুল, বাগেরহাট
বাগেরহাটের চিতলমারীতে লতিফ শেখ (৫০) নামের এক মাছ চাষীকে কুপিয়ে মাছ বিক্রির টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (০১ জুন) দুপুরে ফকিরহাটের ফলতিতা মৎস্য আড়তে মাছ বিক্রি করে ফেরার পথে চিতলমারী উপজেলার বাখরগঞ্জ বাজার সংলগ্ন সুরিগাতি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ওই ব্যবসায়ীকে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মারধরের শিকার লতিফ শেখ বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বাদোখালি গ্রামের মৃত ইসমাইল শেখের ছেলে। ঘটনার সময় লতিফ শেখের চাচাতো ভাই ভাড়ায় চালিত ভ্যানের চালক মুকুল শেখ সাথে ছিলেন। তিনি বলেন, ফলতিতা থেকে মাছ বিক্রি করে লতিফ শেখকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। পথিমধ্যে সুরিগাতি পৌছালে চৌদ্দহাজারি গ্রামের মানিকসহ ৭-৮জন আমাদের ভ্যান আটকে দেয়। পরে বস্তায় থাকা রামদা, কুড়াল ও লাঠি দিয়ে লতিফ শেখকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। সাথে আমাকেও লাঠি দিয়ে পিটাই। এক পর্যায়ে সেজ ভাই(লতিফ শেখ)কে ফেলে রেখে ওরা চলে যায়।সেজ ভাইয়ের কাছে থাকা মাছ বিক্রির টাকাও নিয়ে যায় তারা। পরে একটি অটোতে করে তাকে আমি বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লতিফ শেখের সাথে থাকা তার স্ত্রী কারিমা আক্তার বলেন, ২০২৩ সালের ২০ মার্চ চিতলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৌদ্দহাজারি গ্রামের আতিয়ার শেখের ছেলে মানিক শেখের সাথে পারিবারিকভাবে তার ছোট বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মানিক শেখ নেশা করে তার স্ত্রীকে মারধর করা সহ শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক পর্যায়ে তার বোন বিষয়টি পরিবারকে জানায়। এর প্রেক্ষিতে দুই মাস আগে স্থানীয়দের নিয়ে শালীস-মীমাংসার মাধ্যমে তাদের তালাক হয়ে যায়। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে মানিক লতিফ শেখসহ স্ত্রীর আত্মীয়দের দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এর জেরে আজকে লোকজন নিয়ে হামলা করে এবং কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করে।স্বামীর অবস্থা খুবই খারাপ, হয়ত ঢাকায় নেওয়া লাগবে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এই নারী। কারিমা আক্তার আরও বলেন, তার স্বামীর পায়ে এত বেশি কুপিয়েছে যা বর্ননা করার মত না। কোনভাবেই রক্ত থামানো যাচ্ছে না। স্বামীকে মারধরের বিচার চান এই নারী। এ বিষয়ে মানিক শেখ বলেন, আমার সাবেক স্ত্রী‘র তালাক নিয়ে তাদের সাথে কিছুটা সমস্যা ছিল। কিন্তু আমি এই মারধর করিনি, বলে দ্রুত ফোনটি রেখে দেন। চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম বলেন, মারধরের বিষয়টি এখনও জানা নেই। খোজ খবর নেওয়া হচ্ছে। আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।