২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ভারতে বসবাস করা নারী নিহত

মেহেরপুর প্রতিনিধি
বিয়ে করে ৩০ বছর ধরে ভারতে বসবাস করা এক নারীর বিএসএফের গুলিতে মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, রাতের আঁধারে সীমান্তের কাটাতার পার হয়ে বাংলাদেশে বসবাস করা ভাইয়ের কাছে আসার সময় তাকে গুলি করা হয়। নদীয়া জেলার তেহট্ট থানার ৮নং বিএসএফ ব্যাটালিয়ান নাটনা ক্যাম্পের সদস্যরা গুলি চালায়। মেহেরপুর সদর উপজেলার নবীনগর খালপাড়া সীমান্তের ১১৬ নম্বর মেন পিলারের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত নারীর নাম ইস্তাফন খাতুন। তিনি মেহেরপুর সদর উপজেলার শালিকা গ্রামের মৃত কোমর আলীর মেয়ে। তার মৃত্যুর খবরে ছুটে গিয়েও মরদেহের দেখা পায়নি পরিবার। নিহতের বড় ভাই হাসেম আলী বলেন, ‘৩০ বছর আগে আমার বোন ইস্তাফন বিয়ে করে ভারতের বিহারের একটি শহরে স্বামীর সঙ্গে বসবাস করতো। দুই বছর আগে অবৈধভাবে তারকাটা পেরিয়ে আমাদের কাছে এসেছিল। কয়েক সপ্তাহ থেকে ফিরে যায় বিহারে। পরবর্তী সময়ে স্বামী মারা গেলে শেষ বয়সে তাকে দেখার কেউ না থাকায় বাংলাদেশে আসার কথা জানায় সে। গত তিন দিন ধরে সীমান্তের ওপারে নদীয়া জেলার তেহট্ট থানার নবীনগরে অবস্থান করছিল সে। রবিবার রাতে আমাদের সঙ্গে তার শেষ কথা হয় ফোনে। মধ্যরাতে খবর পাই, তারকাটা পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশেরে সময় নাটনা বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যদের গুলিতে তার মৃত্যু হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘জীবনের শেষ সময়টুকু পরিবারে ভাইবোনদের সঙ্গে কাটাতে চেয়েছিল ইস্তাফন। সেই আশায় গত দেড় বছর চেষ্টা করেও আসতে পারেনি নিজ দেশে। বাধ্য হয়ে গত রবিবার রাতে খালপাড়া সীমান্তে কাটাতার পার হতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু হয় তার।’ নিহতের ভাইয়ের ছেলে বিপ্লব বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে ওপারে একটি বাড়িতে অবস্থান করছিলেন আমার ফুপু। তারকাটা পার হয়ে আমাদের বাড়িতে আসার জন্য চেষ্টা করছিলেন। ফোনে কয়েকবার তার সঙ্গে কথা হয়। রাতে জানতে পারি, বিএসএফের গুলিতে মারা গেছে। তার মৃত্যুর খবরে আমরা স্থানীয় বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্পে মরদেহ ফিরে পাওয়ার আশায় যোগাযোগ করি। ভারতের অভ্যন্তরে ঘটনা ঘটায় বিজিবি মরদেহ পাওয়ার আশ্বাস দিতে পারেনি।’ বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার মনমোহন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘খালপাড়া সীমান্তে নিহতের ঘটনা ভারতের অভ্যন্তরে ঘটেছে। এ বিষয়ে বিএসএফ আমাদের কিছুই জানায়নি। নিহত নারীর জন্ম বাংলাদেশে, তার ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা সীমান্তবর্তী গ্রাম শালিকাতে বসবাস করে। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের কাছে অবৈধভাবে আসতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে।’ এ ঘটনায় সীমান্ত ওই এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়