২০শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

অভয়নগরে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মিনা দাসের বিরুদ্ধে গর্ভবতী রোগীকে হয়রাণির অভিযোগ

অভয়নগর সংবাদদাতা
যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মিনা রাণী দাসের বিরুদ্ধে ভর্তি হতে আসা এক গর্ভবতী নারীকে হয়রাণীর অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার বিকালে সাড়ে ৪ টার সময় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে আসা গর্ববতী ঐ নারীর নাম ফারজানা বেগম(১৮)। তিনি ফুলতলা উপজেলার জুগ্নিপাশা গ্রামের রেজাউল ইসলামের মেয়ে। তার স্বামীর নাম তাইজুল ইসলাম অপু। তিনি ফুলতলা উপজেলার দামুদার বরণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ভুক্তভোগীর পিতা রেজাউর ইসলাম জানান,আমরা পারিবারিক ভাবে দীর্ঘ যাবত ঝিনাইদহের সাবেক সিভিল সার্জন ডাক্তার নাসরিন সুলতানাকে যে কোন সমস্যায় দেখিয়ে আসছ্।ি সেই মোতাবেক আমার মেয়ে ফারজানা গর্ববতী হওয়ার পর থেকেই তাকে দেখাচ্ছি। আগামী জুলাই মাসের ৪ তারিখে মেয়ের ডেলিভারি ডেট রয়েছে। আজ হঠাৎ বিকালের দিকে মেয়ের পেটে ব্যাথা উঠলে মেয়েকে নিয়ে ডাক্তার নাসরীন সুলতানার কাছে যাই। তিনি প্রাথমিক ভাবে মেয়েকে দেখে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে ক্যাথেটার পরিয়ে দিতে বলেন। সাতে সাথে সরকারি হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে গিয়ে ডাক্তারকে সকল রির্পোটের দেখায়। পরে ডাক্তার সিনথিয়া নুর চৈতি ও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মিনা রাণী দাসকে দেখান হয়। এসময় মিনা রাণী দাস আল্ট্রাসোন ও ইউরিনারি টেষ্ট দিয়ে বলেন পালস্ থেকে করিয়ে আনতে হবে। তাছাড়া তিনি ডায়াগনিস্টিকে ফোন দিয়েও বলে আমার এক জন রোগী যাচ্ছে। এ বিষয়ে সাবেক সিভিল সার্জন ডাক্তার নাসরিন সুলতানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফারজানা আমার একজন নিয়মিত রোগী। গর্বধারনকালীন সময় থেকে এ পর্যন্ত আমাকে দেখিয়ে আসছেন। তার ডেলিভারির ডেট রয়েছে জুলাই মাসের ৪ তারিখে। আজ হঠাৎ তার পেটে ব্যাথা (পেইন) উঠলে আমার কাছে তার পরিবারের লোক নিয়ে আসেন। এসময় আমি তাকে প্রাথমিক পরীক্ষা করে দেখতে পায় তার পেট ভরে আছে প্রশাবে, কিন্তু প্রশাব হচ্ছে না ঠিক ভাবে। তখন তাদেরকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ক্যাথেটার দিতে বলি। পরে হাসপাতাল থেকে ফারজানার পিতা এসে বলেন, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মিনা রাণী দাস তার মেয়েকে দুটি পরীক্ষা দিয়েছেন এবং পালস্ ডায়গনিস্টিক থেকে পরীক্ষা করিয়ে নিয়ে যেতে বলেছেন। তানা হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া যাবে না। ডাক্তার নাসরিন সুলতানা আর বলেন, আমার এতো বছরের ডাক্তারি জীবনে কখন দেখিনি সরকরি হাসপাতাল থেকে টেস্ট দিয়ে নির্দিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠান থেকে করিয়ে আনতে বলেন। আর একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার কিভাবে টেষ্ট দিয়ে নির্দিষ্ট ডায়গনিস্টিক থেকে করিয়ে আনতে বলেন। দুঃখের বিষয় বর্তমানে সারকারি হাসপাতালের অবস্থা এতোটাই অবনতি হয়েছে যে রোগীদেরকে যিম্মি করে ডাক্তাররা রম-রমা কমিশন বাণিজ্যে মেতে উঠেছেন। এ বিষয়ে ডাক্তার সিনথিয়া নুর চৈতি বলেন, ফারজানা নামে যে গর্ভবতী রুগী এসেছিলেন তখন আমি ২য় তলায় ভর্তি একজন জরুরী রোগী অসুস্থ হওয়ায় মিনা রাণী দাসকে দেখতে বলে চলে যায়। টেষ্টের ব্যাপারে আমার কিছু জানা নাই। চিকিৎসা সেবা নীতিমালায় বলা আছে, একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) দায়িত্ব প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা। রোগীকে কোন প্রকারের টেষ্টের প্রয়োজন হলে কোন রেজিস্ট্রার ভুক্ত ডাক্তারে শরণাপন্ন হওয়া। উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার(সেকমো) মিনা রাণীর দাসের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফারজানা বেগম নামের একজন গর্ভবতী রোগী আসেন হাসপাতালে। তার শারীরিক অবস্থা না দেখে কিভাবে তাকে চিকিৎসা দিব। এ জন্য আল্ট্রাসোন ও ইউরিনারি টেষ্ট করতে বলি। রোগীর লোক আমার কাছে জানতে চান কোন জায়গা থেকে করালে ভালো হবে। আমি তখন তাদের কে বলি পালস্ থেকে করিয়ে আনতে। এ প্রতিবেদক তার কাছে জানতে চান। একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) কী রোগীকে টেষ্ট দিতে পারেন, জবাবে তিনি বলেন আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে আমি রোগীদেরকে টেষ্ট দিয়ে থাকি। আপনার কিছু বলার থাকলে তার সাথে কথা বলেন। এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা মোঃ ওয়াহিদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,সব কাজের বক্তব্য দেওয়া যাবে না। কোন অভিযোগ থাকলে লিখিত ভাবে দিতে হবে। এছাড়া আপনার সাথে কোন কথা বলতে পারবো না। এবিষয়ে যশোর জেলা সিভিল সার্জন মোঃ মাহামুদুল হাসান বলেন, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) দের টেষ্ট দেওয়ার কোন সুযোগ নাই । এক মাত্র রেজিস্ট্রার ডাক্তার ছাড়া টেষ্ট অন্য কেউ দিতে পারবে না। সেকমো যদি এমন কোন কিছু করে থাকেন সেটা ঠিক করেনি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

 

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়