১৯শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৩রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে প্রয়োজন সতর্কতা

প্রতিদিনের ডেস্ক:
স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত ভারতীয় অভিনেত্রী হিনা খান। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন ৩৬ বছর বয়সি এই অভিনেত্রী। তিনি জানিয়েছেন, তার ক্যানসার এখন তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। সচেতনতা বা নানা ভুল ধারণায় এ রোগ মহামারীর মতো বেড়েই চলেছে। গ্লোবোক্যানের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ১৩ হাজার নারী নতুন করে এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন। মারা যান প্রায় আট হাজার। আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুহার অত্যন্ত উদ্বেগজনক। চিকিৎসাবিজ্ঞান আমাদের জানাচ্ছে, যেকোনো নারীই স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে, পুরুষদেরও এই রোগ হতে পারে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার- আইএআরসি’র হিসাবে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৩ হাজারেরও বেশি নারী নতুন করে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন। মারা যান ৬৭৮৩ জন। নারী ক্যানসার রোগীদের মধ্যে ১৯% ভোগেন স্তন ক্যানসারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যানসারে আক্রান্ত প্রতি ৪ জন নারীর মধ্যে ১ জন স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত। এটি নারীদের মধ্যে ক্যানসারজনিত মৃত্যুর পঞ্চম কারণ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে। বিষয়টি নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক মাহফুদা মোবারক বলেন, ‘স্ক্রিনিং পদ্ধতি অবলম্বনের ফলে ৬০ শতাংশের বেশি রোগীর প্রাথমিক পর্যায়েই স্তন ক্যানসার শনাক্ত করা সম্ভব হয়। এই পদ্ধতিতে ৯৯-১০০ শতাংশ রোগ নিরাময় করা যায়। দেশের মানুষ এখনো এ বিষয়ে তেমন সচেতন নয়। তাই বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে তারা চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন। এ কারণে আমাদের দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার নির্ণয়ের হার ৫ শতাংশের নিচে। তাই স্তন ক্যানসার নিরাময়ের হারও অনেক কম। অর্থনৈতিক সমস্যা তো রয়েছেই একই সঙ্গে মানুষের মধ্যে লজ্জার ভাব রয়েছে। দেশে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার এবং মৃত্যুর হার এক নয়। উন্নত দেশগুলোতে স্তন ক্যানসারের হার অনেক বেশি হলেও মৃত্যুর হার অনেক কম। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, উন্নত দেশগুলোতে প্রতি ১ লাখ নারীর মধ্যে ৯০ থেকে ১১৫ জন স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত। অর্থনৈতিক উন্নয়নে সঙ্গে সঙ্গে দেশে ক্যানসারের সব ধরনের চিকিৎসা বিদ্যমান থাকলেও তার ব্যবস্থাপনা নিয়ে আছে বিস্তর প্রশ্ন। এছাড়াও ব্যয়বহুল এসব চিকিৎসায় হিমশিম খেতে হয় মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত মানুষের। তার ওপর সত্যিকার অর্থেই কোথায় ভালো একটু চিকিৎসা পাবেন সেই তথ্য নিয়েও আছে হাজারও বিভ্রান্তি। আর এসব বিবেচনায় ক্যানসার মানেই ভোগান্তির এক দীর্ঘ অধ্যায়।’ শরীরের ভেতরের ক্যানসারগুলো তো বুঝতে সমস্যা হয় কিন্তু স্তন ক্যানসারের লক্ষণগুলো উঁকি দেয় শরীরের বাইরেই। শুধু চাই একটু সচেতনতা, আর একটু সতর্কতা। আর এই সতর্কতা চাই নারী পুরুষ সবারই। অবাক হওয়ার কিছু নেই কারণ, পুরুষরাও এখন স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশে প্রতিনিয়তই বাড়ছে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। নারী-পুরুষ মিলে তা ৮.৩%।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়