২১শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৫ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

এমপি আনার হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তি দিলেন মোস্তাফিজ

প্রতিদিনের ডেস্ক॥
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলায় গ্রেফতার মোস্তাফিজুর রহমান দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ নিয়ে আলোচিত এ মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজন আদালতে জবানবন্দি দিলেন।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) আসামি মোস্তাফিজুরকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তিনি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত ২৬ জুন এ মামলায় দুই পলাতক আসামি ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়া ও মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল। ওইদিন দুপুর থেকে হেলিকপ্টারে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি। ২৭ জুন আসামিদের আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে ডিবি পুলিশ। ওইদিন শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাউল্লাহ তাদের ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ মামলায় এর আগে সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়া, সিলিস্তি রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। তাদের মধ্যে মিন্টু ছাড়া চারজনই দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে আসামিরা কারাগারে রয়েছেন। বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পর ১৮ মে কলকাতার বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এ সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ। এ ঘটনায় ২২ মে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। মামলার এজাহারে এমপির মেয়ে উল্লেখ করেন, ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাই। ১৩ মে আমার বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেবো’। এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আমরা বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজখবর করতে থাকি। কোনো সন্ধান না পেয়ে বাবার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস কলকাতার বরাহনগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। বাবাকে খোঁজাখুঁজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তীসময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাবাকে অপহরণ করেছে। বাবাকে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। এছাড়াও আরও কয়েকটি মেসেজ আসে। মেসেজগুলো বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে, এজাহারে উল্লেখ করেন ডরিন।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়