৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

সেতু ভবনে প্রাণ ফিরুক

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় দুই দফায় হামলা হয়েছে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সেতু ভবনে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সুযোগে দুষ্কৃতকারীরা সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করতে মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে। দুষ্কৃতকারীরা বনানীর সেতু ভবনে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এমন অবস্থায় এই কার্যালয়ের কার্যক্রম চালু হতে কয়েক মাস সময় লাগবে। বর্তমানে সেতু ভবনের চিত্র ভয়াবহ। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেতু বিভাগের ৫৫টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। স্টাফদের খাবারের ক্যান্টিন, আনসার ব্যারাক, ড্রাইভার রুম আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। ক্যান্টিনের দুটি ফ্রিজের একটি লুট হয়েছে। অন্য ডিপ ফ্রিজটি নিতে না পেরে ভেঙে বাইরে ফেলে গেছে। ক্যান্টিনের ভাতের প্লেট, গাস, বাটি, চামচ পর্যন্ত লুট করে নিয়ে গেছে। ১৮ জুলাই বিকাল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়ে সেতু ভবনকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। পরদিন বিকালের দিকে তারা আবারো হামলা চালায়। ভবনের নিচতলায় ধ্বংসস্তূপে পা ফেলার মতো জায়গা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেতু ভবনের লোকজন মনে করেন, হামলাকারীরা মহাখালীর আশপাশের লোকজন হতে পারে। হামলাকারীদের মধ্যে ১৫-২০ বছর বয়সি লোকের সংখ্যাই বেশি ছিল। তাদের কাউকে দেখে ছাত্র বলে মনে হয়নি। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে বলেও মনে হয়নি। হামলা ও লুটপাট করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। তাদের কেউ আমাদের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টাও করেনি। এসব ঘটনায় গত শনিবার বনানী থানায় মামলা করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)। আর ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ঢাকা মহানগরীতে সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড হয়েছে। এসব ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। জড়িত অনেকের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। সেতু ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া ও লুটপাটের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে মহাখালী থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আমরা চাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত দোষীদের যত দ্রুত সম্ভব আইনের আওতায় আনা হোক এবং শাস্তির এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হোক, যেন ভবিষ্যতে কেউ রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানে হামলা করার আগে শতবার চিন্তা করে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সেতু বিভাগ দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এমন প্রতিষ্ঠান আক্রান্ত হলে বিভিন্নভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে দেশ। তাই সেতু ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা জরুরি।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়