৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ২১শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

মানুষের অর্থ উদ্ধার করুন

আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকা, প্রশাসনের অবহেলা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোর কার্যকর পদক্ষেপের অভাবসহ নানা কারণে বাড়ছে প্রতারণা। কেউ চাকরির প্রলোভন দিয়ে, কেউ বিদেশে পাঠানোর কথা বলে মানুষের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। আবার কিছু মানুষ সমবায়, এনজিও কিংবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান খুলে নানা প্রলোভন দিয়ে মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ নিয়ে সটকে পড়ছে। প্রায়ই পত্রপত্রিকায় এ ধরনের অনেক খবর প্রকাশিত হয়। খবরে প্রকাশ, ময়মনসিংহের ভালুকায় একটি এনজিও মানুষকে সঞ্চয়ের বিপরীতে ১০ গুণ ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। আর তাতেই প্রলুব্ধ হয়ে অনেকে প্রতিষ্ঠানটিতে অর্থ জমা দিতে থাকে। কয়েক দিন আগে অসহায় মানুষের প্রায় তিন কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) নামের এনজিওর কর্মকর্তারা। প্রতারিত ব্যক্তিরা প্রতিদিনই ভালুকা পৌরসভার চাপরবাড়ী গ্রামে বিডিএস সমিতির কার্যালয়ে এসে ভিড় করছেন। কিন্তু তাদের কোনো সন্ধান মিলছে না। এনজিওটিতে থাকা কাগজপত্রের সূত্রে জানা যায়, এটির প্রধান কার্যালয় মানিকগঞ্জে। ঠিকানা হচ্ছে, রমজান আলী কলেজ রোড, জয়রা, মানিকগঞ্জ। রেজিস্ট্রেশন নম্বর হচ্ছে গভ. রেজি. নম্বর-এস-১৯৬১ ইন ১৯৮৯-১৯৭৮। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ভালুকায় শাখা খোলে। পৌরসভার চাপরবাড়ী এলাকার জনৈক প্রবাসীর পাঁচতলা ভবনের নিচতলা ভাড়া নিয়ে তারা অফিস খোলে। প্রচার চালানো হয়, বিডিএস সমিতিতে সঞ্চয় জমা দেওয়ার এক থেকে দুদিনের মধ্যেই মুদি দোকানি, চাকরিজীবী, প্রবাসীসহ ১০টি খাতে স্বল্প সুদে সঞ্চয়ের ১০ গুণ ঋণ পাওয়া যাবে। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তারা ৪০০ জন সমিতির সদস্য হয়। সদস্যরা ১০ হাজার থেকে শুরু করে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা করে সমিতির তহবিলে। জানা যায়, এভাবে প্রায় তিন কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। এরপর গত রবিবার রাতে অফিসে তালা ঝুলিয়ে সমিতির কর্মকর্তারা পালিয়ে যান। রোকেয়া নামের এক ভুক্তভোগী জানান, দুই লাখ টাকা ঋণ পাওয়ার আশায় তিনি ধার করে ২০ হাজার টাকা এনে গত রবিবার বিডিএস সমিতিতে জমা দিয়েছিলেন। সমিতির মাঠকর্মী আকলিমা একই দিন তাঁদের পাড়ার আরো ছয় নারীর কাছ থেকে ৮৬ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা নিয়েছেন। এ ব্যাপারে ভালুকা মডেল থানায় একটি মামলাও হয়েছে। কিন্তু প্রতারকদের ধরা কিংবা টাকা উদ্ধারে কোনো অগ্রগতি নেই। স্থানীয় প্রশাসন এ ঘটনার দায় এড়াতে পারে না। সমিতিটি যখন কার্যক্রম শুরু করেছিল তখনই তাদের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া প্রয়োজন ছিল। সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। কেউ অতিরিক্ত মুনাফা বা সুবিধা দেওয়ার কথা বললেই সন্দেহ করতে হবে এবং স্থানীয় প্রশাসনকে জানাতে হবে। আমরা আশা করি, দ্রুত প্রতারকদের গ্রেপ্তার এবং ভুক্তভোগীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়