৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ১৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দিয়েছে ডিবি

প্রতিদিনের ডেস্ক:
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে হেফাজত থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে সংস্থাটির নিজস্ব পরিবহনে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বাবা বদরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আজ ভোর ৬টার দিকে সমন্বয়কদের পরিবারকে ফোন করে তাদের কার্যালয় থেকে নিয়ে যেতে বলা হয়। পরে সকালে ছয় সমন্বয়কের স্বজনরা ডিবি কার্যালয়ে যান। দুপুরের দিকে সংস্থাটির কালো রঙের একটি গাড়িতে করে স্বজনসহ তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি) আজহার মুকুলও।এর আগে গত শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকালে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নাহিদ ইসলামসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। সেদিন ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান (সদ্য বদলি হওয়া) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়েই আনা হয়েছে।নাহিদ ছাড়া অপর অপর দুই সমন্বয়ক হলেন আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার। তারা তিন জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পরদিন সন্ধ্যায় সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকেও কার্যালয়ে আনা হয়। এরপর রবিবার ভোরে মিরপুরের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তুলে আনা হয় নুসরাত তাবাসসুমকে। এরপর থেকে তারা মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে ছিলেন।সেখানে থাকা অবস্থায় এক ভিডিও বার্তায় আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন এই ছয় জন। তবে তাদের দিয়ে জোর করে এই ঘোষণা দেওয়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অন্য সমন্বয়করা। পরে তাদের সঙ্গে এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে দুই দফায় খাবার খাওয়ার ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে আবারও আলোচনায় আসে ডিএমপির এই উইং। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন উচ্চ আদালতও। তাদের ছেড়ে দেওয়া সংক্রান্ত একটি রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট মন্তব্য করেন, ‘ডিবি অফিসে যাকে তাকে ধরে নিয়ে যাবেন, তারপর খাবার টেবিলে বসাবেন। এভাবে জাতির সঙ্গে মশকরা করবেন না’।এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তোলেন ১৪ দলীয় জোটের নেতারাও। বিষয়টি তুলে ধরে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর বলেন, এটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। ডিবিতে যে সমন্বয়কদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে এটি ঠিক হয়নি।১৪ দল থেকে ডিবির এ ধরনের কর্মকাণ্ড ও বিশেষ করে ডিবি প্রধানের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সমালোচনা করা হয়। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিবির এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাতেই কথা বলবেন।এমন আলোচনার পর বুধবার (৩১ জুলাই) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় হারুন অর রশিদকে। তাকে বদলি করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়