আগের সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্প নামে ভূমিহীন-গৃহহীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছিল। দলিল করে এক টুকরা জমি ও একটি ঘর বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাতে সারা দেশে কয়েক লাখ পরিবার উপকৃত হয়েছিল। কিন্তু সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে স্বার্থপর ও সুযোগসন্ধানী কিছু মানুষ তেমন কিছু পরিবারের ওপর হামলে পড়েছে। খবরে জানা যায়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের বেহেত্তরী গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতে কিছু মানুষ রামদা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। তারা প্রকল্পের ঘরগুলোর দরজা-জানালা ও রান্নাঘর ভেঙে দেয়। নিরুপায় হয়ে এই আশ্রয়ণের বাসিন্দারা চোখের পানি ফেলতে ফেলতে সেসব ঘর ছেড়ে চলে যায়। হামলাকারীরা দাবি করে তারা এই জমির মালিক। যদি ধরেও নিই যে তারা এই জমির মালিক তাতেও কি তারা এভাবে হামলা করে তত্ক্ষণাৎ কাউকে উচ্ছেদ করতে পারে? দেশে কি আইন-কানুন, নৈতিকতা ও মানবিকতা বলে কোনো কিছুই থাকবে না? প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ৭০ বছরের বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম কাঁদতে কাঁদতে জানান, হামলাকারীরা চুলের মুঠি ধরে মারতে মারতে তাঁকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, এখন আমি কোথায় যাব? একইভাবে ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মো. নুরুল ইসলাম ফকির জানান, তিনি দুপুরের খাবার খেতে বসেছিলেন। ওই সময় হঠাৎ কিছু লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে তাঁদের ঘরগুলোতে ভাঙচুর চালাতে শুরু করে। তাঁদের দলিল দেখালেও তারা থামেনি, বলে, দলিল নাকি ঠিক না। তাদের সঙ্গে পেরে না ওঠায় সবাই আসবাব নিয়ে বেরিয়ে আসেন। জানা যায়, এলাকার প্রভাবশালী দুই ভাই আরো কিছু লোকজন সঙ্গে নিয়ে এসে এমন হামলা চালিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণ-আন্দোলনে রূপ নিলে আগের সরকারের পতন হয়। কিন্তু আগের সরকারের সব কাজ যে খারাপ হয়েছে কিংবা সব কিছু বাতিল হয়ে গেছে, এমন তো নয়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমির মালিক যদি আসলেই অন্য কেউ হয়, তাহলে আইনানুগভাবেই তাকে তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে বাসিন্দাদের মারধর করে তাড়িয়ে দিয়ে জমির দখল নেওয়া অরাজকতারই শামিল। আমরা আশা করি, প্রশাসন অবিলম্বে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করবে। প্রকল্পের ঘরে যাঁরা ছিলেন তাঁদের পুনরায় ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। যারা প্রকল্পের বাসিন্দাদের ওপর হামলা ও মারধর করেছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন
Previous article
আরো দেখুন
তৈরি পোশাক শিল্পে অস্থিরতা
বাংলাদেশের পোশাকশিল্প অনেকটাই এগিয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজস্ব একটি বাজার সৃষ্টি করতে পেরেছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক। বাংলাদেশের পোশাকের চাহিদার কারণে প্রতিবছর বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ...
প্রসঙ্গ: ফের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ
মায়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। এই রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ নানাভাবে জাতিসংঘসহ...