২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাস আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস জনশক্তি রপ্তানি। একসময় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার ছিল সৌদি আরব। এর পাশাপাশি ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান। পাশাপাশি ছিল কুয়েত। কাছের দেশ মালয়েশিয়াও একসময় দেশের অভিবাসী কর্মীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, অতীতে বিভিন্ন সময়ে শ্রমবাজার নিয়ে সিন্ডিকেটসহ নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ওমান এবং চলতি বছরের ৩১ মে থেকে বাংলাদেশের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। শুধু ওমান ও মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে প্রায় ৫০ শতাংশ বাংলাদেশি কর্মী যাওয়া কমে গেছে। মালদ্বীপ তাদের শ্রমবাজারে বাংলাদেশ থেকে আর কোনো অদক্ষ কর্মী নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের জন্য বর্তমানে একমাত্র সৌদি আরবের শ্রমবাজার উন্মুক্ত। প্রতিবছর দেশটিতে লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক যাচ্ছেন। সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও ওমান ছাড়া ১১টি শ্রমবাজারে শত থেকে হাজারের মধ্যে বাংলাদেশি কর্মী যান। এই শ্রমবাজারগুলো হলো—সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, সিঙ্গাপুর, জর্দান, লেবানন, লিবিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়া। একসময় ইউরোপের নানা দেশেও জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ ছিল। প্রচলিত বাজারের বাইরে আমাদের বাজার হচ্ছে ইউরোপ। ইউরোপের বাজারের বড় সমস্যা, যেসব দেশ বাংলাদেশি কর্মী নেয়, এমন অনেক দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই। এর ফলে এক ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছে। বিশেষ কনসুলেট অফিস স্থাপন করে ইউরোপের শ্রমবাজারের ভিসাপ্রক্রিয়া সহজ করা গেলে বর্তমান পরিস্থিতি অতিক্রম করে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাস আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস জনশক্তি রপ্তানি। এখন নতুন করে আমাদের শ্রমবাজার খুঁজতে হবে। পুরনো বাজারগুলোতে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে নতুন করে জনশক্তি রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। এমনিতেই বৈদেশিক কর্মসংস্থানের দিক থেকে পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ যথেষ্ট পিছিয়ে আছে। এর একটি প্রধান কারণ দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে আমাদের পিছিয়ে থাকা। এ ক্ষেত্রে আরো উদ্যোগী হতে হবে। নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করতে হবে। দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে। বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় শিক্ষিত ও দক্ষতাসম্পন্নদের কদর বাড়ছে। বিকাশমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাই জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়