সুন্দর সাহা
বেনাপোল বন্দরে থামছেই না শুল্কফাঁকির মচ্ছব। লাগামহীনভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা দায়িত্বরত কাস্টমস কর্তাদের সহযোগিতায় শুল্কফাঁকি দিয়ে আঙুল ফুলে বনে যাচ্ছে কলাগাছ। এবার বেনাপোল বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষনায় আমদানী করা হয়েছে অ্যালকোহলযুক্ত মেডিসিন। অবৈধভাবে আনা ৯০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত শতকোটি টাকার হোমিও মেডিসিন জব্দ করেছে বেনাপোল কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দারা। পণ্য চালানটির বিল অফ এন্ট্রি নম্বর-৬৮৭০৩, তারিখ ১৮অগাস্ট। আমদানিকারক চট্রগ্রামের ‘দ্য হোমিও ওয়ার্ল্ড, গত ২৮জুলাই ভারত থেকে ২ হাজার ২০০ প্যাকেজের (গ্রোস ওয়েট) ২২ হাজার ২৭৯ কেজি ওজনের হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন-১. Dilution 1M 500ml. ২. Dilution 200CH – 500ml. ৩. Dilution 3X-30 CH 500ml. ৪. Mother Tincture D/A.আমদানি করে। চালানটি বেনাপোল স্থলবন্দরের ৩৪ নং সেডে রাখা হয়। যার ম্যানুফেস্ট নম্বর ৬০১২০২৪০০২০০৪৬৩২১। জব্দকৃত চালানটির বাজার মূল্য ১০০ কোটি টাকার বেশি। আমদানিকারক চালানটির ঋণপত্রে (এলসি) মূল্য দেখিয়েছেন ৭৫ হাজার ৩১২ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৮ লাখ ৮৬ হাজার ৮১৬ টাকার সমান। বেনাপোলে আমদানিকারকের প্রতিনিধি হিসেবে সিএন্ডএফ এজেন্ট ‘মহিউদ্দিন আহমেদ এন্ড সন্স’ কাজ করছেন। পণ্য চালানটি এইচএস কোড ৩০০৪৯০২০ অনুযায়ী ১০ শতাংশ শুল্কহারে রাজস্বের জন্য ৯ লাখ ৯ হাজার ৭৬৩ টাকায় বিল অব এন্ট্রি সাবমিট করেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে উক্ত পণ্যের এইচএস কোড হবে ৩০০৪৯০১০। যার ৫৮.৬০ শতাংশ হারে রাজস্ব নির্ধারিত হবে বলে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনারকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। ঔষধ গুলোর একেকটির দাম একেক রকম। ঘোষনা বহির্ভূত এবং অতিরিক্ত ৯০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত (রেকটিফাইড স্প্রীট) ও চারটি আইটেমের বিপরীতে ৩৮২ আইটেমের বিভিন্ন নামের ঔষধ আমদানি করেছে বলে এনএসআই বেনাপোল স্থলবন্দরের কর্মকর্তা বিষয়টি বেনাপোল স্থলবন্দরের শুল্ক গোয়েন্দার উপ-পরিচালক সাইফুজ্জামানকে অবহিত করলে তার নেতৃত্বে চালানটি পরীক্ষা করে এনএসআইয়ের গোপন তথ্যের সঠিকতা পাওয়ায় পন্য চালানটি আটক করে খালাস স্থগিত করে দেন। বেনাপোল কাস্টমস হাউজের যুগ্ম কমিশনার সাফায়েত হোসেন মিডিয়াকে জানান, ‘আমদানিকৃত কোন পণ্যে অনিয়ম পেলে সেটা তো আটক করতেই হবে। আমদানিকারক চট্রগ্রামের দ্য হোমিও ওয়ার্ল্ড, হোমিও মেডিসিন নামে ঘোষণা দিয়ে এই পণ্য চালান আমদানি করেন। পণ্যটি বেনাপোল বন্দরে আসার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএস আই-এর দেওয়া তথ্যে শুল্ক গোয়েন্দার সদস্যরা পণ্যটিতে আমদানি নিষিদ্ধ অতিরিক্ত ৯০ শতাংশ অ্যালকোহল পাওয়া গেছে। যে কারনে চালানটি আটক করা হয়েছে। বর্তমান বেনাপোল কাস্টমস হাউসে অনিয়মে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে বলে এই কর্মকর্তা দাবি করেন। কেউ অনিয়ম করলে কোন প্রকার কাউকে ছাড় দেওয়া হয় না বেনাপোল কাস্টমস হাউসে। এ পন্য চালানের ক্ষেত্রেও কোন ছাড় দেওয়া হবে না।’