২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোয় বড় ভূমিকা রাখবে

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর প্রথমবারের মতো ঢাকা সফর করছে উচ্চপর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধি দল। দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান। এছাড়া দিল্লি সফর শেষে এসেছেন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। তিন দিনের সফরের দ্বিতীয় দিন রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশকে সহায়তা করতে ওয়াশিংটন প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন। ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট থেকে জানা যায়, মার্কিন প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ দেশের মানুষের কল্যাণে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রতিষ্ঠান গঠন ও উন্নয়ন সহযোগিতার বিষয় নিশ্চিত করেছে। যেহেতু বাংলাদেশ আরও ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে চাইছে, যুক্তরাষ্ট্র সে প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে প্রস্তুত। একই সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার খাতে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তাও দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিধি দলের ব্যক্ত করা এ মনোভাব ও সহায়তাকে স্বাভাবিকভাবেই স্বাগত জানাই আমরা। প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছে, এ সহায়তা চুক্তি দেশের মানুষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করা, স্বাস্থ্য, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, তরুণদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করাসহ দেশের প্রয়োজনীয় খাতগুলোয় ভূমিকা রাখতে পারবে। ওয়াশিংটনের নজরও সেদিকেই। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলার ক্ষেত্রেও সহায়তার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন তারা। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ দেশের জনগণের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধির যে অভাব বিগত সরকারের আমলে সৃষ্টি হয়েছিল, ওয়াশিংটনের এ সহায়তা তা অনেকাংশেই কাটানো সম্ভব হবে। সবচেয়ে বড় কথা, এ সহায়তা দেশের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে লক্ষ রাখতে হবে, অর্থনীতির পাশাপাশি অগ্রাধিকার খাতগুলোয় এ সহায়তার যেন যথাযথ ব্যবহার হয়। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার। শুধু তাই নয়, দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কও অত্যন্ত দৃঢ়। দেশের অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বড় অবদান থাকলেও বিগত বছরগুলোতে দুদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির হার খুব একটা আশাব্যঞ্জক ছিল না। এর কারণ গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিগত সরকারের সম্পর্কের টানাপোড়েন। তবে ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী বিপ্লবে বিগত সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি এখন পালটে গেছে। মার্কিন প্রতিনিধি দলের এ সফর দুদেশের মধ্যে সব ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও জোরদার করবে, এটাই প্রত্যাশা।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়