আমীন আল রশীদ
দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতে তিন হাজার মেট্রিক টন ইলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছিলেন, এবার ভারতে ইলিশ পাঠানো যাবে না। কারণ তিনি চান দেশের মানুষ কম দামে ইলিশ খাক। অথচ গত ২১ সেপ্টেম্বর জানা গেলো, এবার তিন হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে ভারতে।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি হয়েছিলো এক হাজার ৩৭৬ টন ইলিশ। তার মানে এক অর্থবছরে যে পরিমাণ ইলিশ পাঠানো হয়েছিল, এবার এক দুর্গাপূজাতেই পাঠানো হচ্ছে তার দ্বিগুণের বেশি! মৎস্য প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত তার মন্ত্রণালয়ের নয়। এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বরং ইলিশ রপ্তানি না করার বিষয়ে তিনি আগের অবস্থানেই আছেন।
সবশেষ গত ১৬ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের যে দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়, সেখানে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন সালেহ উদ্দিন আহমেদ। অর্থাৎ ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার মন্ত্রণালয়। কিন্তু এটা ঠিক যে, ভারতে একসঙ্গে তিন হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির বিষয়টি শুধুমাত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কিংবা উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদের একক সিদ্ধান্ত নয়। বরং এটি ভাবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, এই সিদ্ধান্তটি এসেছে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেয়া অন্তর্বর্তী সরকারের অনেক উপদেষ্টা এবং তাদের নীতিনির্ধারকদের কথায় ‘ভারতবিরোধিতা’ স্পষ্ট। কিছু কিছু ঘটনায় ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের দারুণ অবনতিরও আভাস পাওয়া যাচ্ছিলো। এরকম পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে তিন হাজার মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির সিদ্ধান্ত হলো—সেটি নিয়ে নানাবিধ আলোচনা আছে। যেহেতু সিদ্ধান্তটি এসেছে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অংশগ্রহণের ঠিক আগ মুহূর্তে। যখন জানা যাচ্ছে যে, অধিবেশনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এমনকি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক হলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। অতএব এই ইলিশ পাঠানোর পেছনে দ্বিপক্ষীয় কূটনীতির কোনো সম্পর্ক আছে কি না, সে বিষয়ে উপসংহারে পৌঁছানো কঠিন।
তবে এটা ঠিক যে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ সীমান্ত হত্যা ও অভিন্ন নদীতে ভারতের বাঁধ ও একতরফা পানি প্রত্যাহার ইস্যুতে যে ভাষায় কথা বলছেন, সেটি অতীতের কোনো মন্ত্রী বলেননি। যেদিন ভারতের তিন হাজার মেট্রিক টন ইলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হলো তার পরদিনই পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে অতীতের নিরবতা ও নিষ্ক্রিয়তার দিন শেষ হয়ে গেছে।’ বাংলাদেশের পয়েন্ট অব ভিউ তথা পানি কূটনীতির দৃষ্টিভঙ্গিতে এই বক্তব্য ও টোন নিঃসন্দেহে সাহসী ও প্রশংসনীয়। কেননা অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, বিশেষ করে গঙ্গা, তিস্তা, বাঁধ ও ব্যারাজ ইস্যুতে অতীতে আমাদের নীতিনির্ধারকদের কেউই এরকম সোজাসাপ্টা কথা বলেছেন—তার উদাহরণ কম। বরং বাংলাদেশ যে অভিন্ন নদীর পানি ইস্যুতে দরকষাকষিতে বারবারই ব্যর্থ হয়েছে, তার পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে দুর্বল ও নতজানু কূটনীতিকেই দায়ী করা হয়। এরকম বাস্তবতায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার সরাসরি বিরোধিতার মুখেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কী করে কিংবা কী কারণে তিন হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিলো এবং এর সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্কে সাম্প্রতিক টানপোড়েন অথবা জাতিসংঘ অধিবেশনেরে কোনো সম্পর্ক আছে কি না—তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন আছে।
এটা ঠিক যে, ভারতে রপ্তানি হলেই ইলিশের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে আর রপ্তানি না হলেই মানুষ চারশো টাকা কেজিতে ইলিশ খাবে—বিষয়টা এমন নয়। কেননা কয়েক দিন আগেও একাধিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের রপ্তানি না হলেও এবং বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশ থাকার পরেও এর দাম আগের মতোই। বরং কোথাও কোথাও গত বছরের এই সময়েরও চেয়ে বেশি দামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন (ধরা) হয়েছে ৫ লাখ ১৭ হাজার টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫ লাখ ৫০ হাজার টন। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ লাখ ৬৫ হাজার টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫ লাখ ৬৭ হাজার টন এবং সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৭১ হাজার টন। চলতি অর্থবছরে কত লাখ টন ইলিশ পাওয়া গেলো তা জানতে আরও সময় লাগবে। যদি পাঁচ লাখ টনও ইলিশ ধরা পড়ে, সেখান থেকে তিন হাজার টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি অংকের হিসাবে অনেক বেশি নয়। কিন্তু এবার এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে প্রধানত দুই কারণে। ১. গত পুরো অর্থবছরেই যে পরিমাণ ইলিশ রপ্তানি হয়েছে, এবার একসঙ্গে তার দ্বিগুণেরও বেশি পাঠানো হচ্ছে এবং ২. স্বয়ং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার সিদ্ধান্ত বা চাওয়াকে উপেক্ষা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, সরকারের ভেতরেই সমন্বয়হীনতা রয়েছে কি না।
স্মরণ করা যেতে পারে, ২০১২ সালের পয়লা আগস্ট ইলিশসহ সব ধরনের মাছ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। পরে ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর ইলিশ ছাড়া অন্য সব মাছ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হলেও ইলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে। তবে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে তৎকালীন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, পাচার বন্ধে জাতীয় মাছ ইলিশ রপ্তানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। তিনি বলেন, যেহেতু উৎপাদন হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদাও আছে, সেজন্য সরকার কিছুটা রপ্তানি করতে চায়। কেননা মন্ত্রীও এটি স্বীকার করেন যে, রপ্তানির অনুমতি না দিলেও ইলিশ মাছ বিভিন্নভাবে চোরাইপথে দেশের বাইরে চলে যায়। ফলে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় রাষ্ট্র। তাই রপ্তানির সুযোগ দেয়া হলে পাচার বন্ধ হবে। সুতরাং এবারও সেই একই কারণে, অর্থাৎ পাচার বন্ধ করে রাজস্ব আদায় করতে ভারতে তিন হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও অনেকে মনে করেন।
দুই.
এটা ঠিক যে, ইলিশ মাছের সঙ্গে বাঙালির আবেগ-অনুভূতি জড়িয়ে আছে। আর কোনো মাছের সঙ্গে যেটি নেই। বাংলাদেশে পয়লা বৈশাখে পান্তা-ইলিশের ক্রেজ এখন অনেকটাই কমেছে। এর পেছনে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন উদ্যোগের ভূমিকা আছে। সবচেয়ে বড় কথা, যখন বাংলাদেশে পয়লা বৈশাখ বা বাঙালির বর্ষবরণ উৎসব হয়, তখন ইলিশের মৌসুম নয়। নয় বলে উৎসাহী মানুষেরা ১০ হাজার টাকা দিয়েও একটা ইলিশ মাছ কিনেছেন, এরকম সংবাদও একসময় গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পয়লা বৈশাখে ইলিশের এই ক্রেজ বা উন্মাদনা কমলেও ইলিশের দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের আক্ষেপ ও অসন্তুষ্টির অবসান হয়নি। কারণ সাধারণ মানুষ যে দামে ইলিশ কিনতে চায়, সেই দামে এখনও ভালো সাইজের ইলিশ পাওয়া যায় না। তবে ছয় সাতশো টাকা কেজিতে ছোট আকারের ইলিশ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ পয়লা বৈশাখে ইলিশ নিয়ে উন্মাদনা কমলেও ভারতে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপূজার সময় ইলিশ নিয়ে উন্মাদনায় কোনো ছেদ পড়েনি। এর প্রধান কারণ বছরের যে সময়টায় দুর্গাপূজা হয়, তখন মূলত ইলিশের ভরা মৌসুম। তাছাড়া একসময় গঙ্গা নদী তথা বাংলাদেশে যেটি পদ্মা, সেই নদীতেও প্রচুর ইলিশ মাছ পাওয়া যেতো। নানা কারণে এখন আর সমুদ্র থেকে খুব বেশি উত্তরে ইলিশ পাওয়া যায় না। যে কারণে পশ্চিমবঙ্গবাসীকে ইলিশের জন্য প্রধানত নির্ভর করতে হয় বাংলাদেশের ওপর। কিছু ইলিশ মিয়ানমার থেকে আসে। বাংলাদেশের বাজারেও অনেক সময় বিশাল আকারের ইলিশ দেখা যায়। যার অধিকাংশই আসে মূলত মিয়ানমার থেকে। এই ইলিশগুলো দেখতে যেমনই হোক, এর স্বাদ মোটেই ভালো নয়। দখিনের শহর বরিশালের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কীর্তনখোলা, তার পাশেই ঝালকাঠি শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুগন্ধা এবং বরিশালের বানারিপাড়া উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সন্ধ্যা নদীর মাঝারি আকারের ইলিশেরও যে স্বাদ, তা মিয়ানমারের দুই কেজি সাইজের মাছেও পাওয়া যায় না। ফলে বাংলাদেশের ইলিশের ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গবাসীর বিশেষ আগ্রহ রয়েছে।
প্রতিবেশী মানেই আদান-প্রদান। যদি উভয়ই বন্ধুসুলভ হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক যেমন ঐতিহাসিক, তেমনি টানাপোড়েনের গল্পও অনেক। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএসফ-এর গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা, অভিন্ন নদীর পানি নিয়ে ভারতের স্বেচ্ছাচার, বাণিজ্য ঘাটতি, বাংলাদেশের রাজনীতি ও ক্ষমতাকাঠামোয় প্রভাব বিস্তারসহ নানা কারণে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক মূলত অম্লমধুর। কোনো কোনো সরকারে আমলে এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বেশ ভালো হয়। কখনো দারুণ অবনতি হয়।
কিন্তু রাষ্ট্রীয় এই কূটনীতির মারপ্যাঁচ সাধারণ মানুষ বুঝতে চায় না। দুর্গাপূজা এলে কলকাতার লোকেরা চায় বাংলাদেশ থেকে প্রচুর ইলিশ আসুক। আবার বাংলাদেশেও যখন পেঁয়াজের সংকট হয়, তখন ভারতকেই এগিয়ে আসতে হয়। সম্প্রতি ভারত থেকে প্রচুর ডিমও এসেছে। সুতরাং প্রতিবেশী মানেই হলো তার অসুবিধায় পাশে থাকা, যাতে করে আমার অসুবিধার সময় তাকে কাছে পাওয়া যায়। তাছাড়া সম্পর্ক সব সময় দেয়া-নেয়ার ওপরও নির্ভর করে না। অর্থাৎ দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক শুধুমাত্র ইলিশ ও পেঁয়াজের ওপর নির্ভর করে না এটা যেমন ঠিক, তেমনি পারস্পরিক আস্থা, শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস না থাকলে সামান্য ইলিশ বা পেঁয়াজও সম্পর্ক অবনতির কারণ হতে পারে।
দুটি রাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনীতিক চ্যানেলে কী আলোচনা হচ্ছে; কে কতটুকু দরকষাকষিক করে কী নিতে পারলো আর কতটুকু ছাড় দিলো—সাধারণ মানুষ সব সময় সেটা জানতে পারে না বা জানতে চায়ও না। কেননা রাষ্ট্রীয় এইসব অংকের বাইরে গিয়ে মানুষে মানুষে যে সম্পর্ক, যে আত্মীয়তা; বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির বিরাট অংশের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের যে হৃদ্যতা—তার পেছনে আছে শেকড়। পশ্চিমবঙ্গের অনেক খ্যাতিমান তো বটেই, অসংখ্য সাধারণ মানুষের পূর্বপুরুষের ভিটা এই বাংলাদেশ। ফলে এখান থেকে যে ইলিশ তাদের ওখানে যায়, সেই ইলিশের গায়ে সে তার শেকড়ের গন্ধ পায়।
একটা ঘটনা দিয়ে শেষ করি। আমাদের বন্ধু শুভজিৎ কলকাতা শহরের মোটামুটি পরিচিত সাংবাদিক। তারও শেকড় বরিশাল। বছর কয়েক আগে সে ঢাকায় এলো। বললো, বরিশালে যাবে। জিজ্ঞেস করলাম, ওখানে তোমাদের কেউ থাকে? বললো ‘না, মাটি আনতে যাব।’ মাটি আনতে? ‘হ্যাঁ। জ্যাঠা বলে দিয়েছে, দ্যাশে যদি যাও তো অবশ্যই বরিশাল থেকে একটু মাটি নিয়ে আসবি।’
এই হচ্ছে শেকড়ের টান। এই টান, এই ভালোবাসা, এই অনুভূতি সেই লোকটির পক্ষে কোনোদিনই উপলব্ধি করা সম্ভব নয়, যে তার শেকড় ছেড়ে অন্য দেশে গিয়ে বসবাস না করছে।
অতএব, ইলিশ নিয়ে কূটনীতি যাই হোক না কেন, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের যে হৃদয়ের টান—সেটি কোনো কূটনীতির সূতোয় বাঁধা সম্ভব নয়। বিশেষ করে যে মানুষগুলো একসময় এই বঙ্গেই ছিলেন।
পরিশেষে, দুর্গাপূজায় শুধু পশ্চিমঙ্গের বিত্তবানরা নয়, সাধারণ বাঙালির পাতেও ইলিশ উঠুক। সেইসঙ্গে বাংলাদেশেও ইলিশ যেভাবে বড়লোকের মাছে পরিণত হয়েছে, তার অবসান হোক। একজন দিনমজুরও যেন এক কেজি সাইজের না হোক, অন্তত ছয়শো গ্রামের একটি ইলিশ নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে। তারও জীর্ণ রান্নাঘর যেন ইলিশের সুঘ্রাণে ভরে ওঠে। জুঁইফুলের মতো সাদা গরম ভাতের ওপর যেন একটুকরো ইলিশ তারও মন ও হৃদয়কে দোলা দেয়—এই প্রত্যাশা।
লেখক : সাংবাদিক ও লেখক।