প্রতিদিনের ডেস্ক॥
সরকার পতনের পর বিসিএসসহ সব ধরনের নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে চেয়ে ছিল আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগ পাওয়া চেয়ারম্যানসহ সদস্যরা। ফলে একে একে ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা, ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেন তারা।
চাকরিপ্রত্যাশীদের দাবির মুখে অবশেষে পিএসসিতে গতি ফেরাতে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সভা করে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে দুটি বিসিএসের স্থগিত পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা ও প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পিএসসি সূত্র জানায়, বৈঠকের দ্বিতীয় অংশে স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেওয়ার ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়। সেখানে সব ঠিক থাকলে এবং সরকারের পক্ষ সহযোগিতা পেলে অক্টোবরের মাঝামাঝি ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে বলে সিদ্ধান্ত হয়। তাছাড়া স্থগিত থাকা ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নভেম্বরে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে আলোচনা হয়।সভায় অংশ নেওয়া পিএসসির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এগুলো আসলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কি না, তা বলা মুশকিল। সরকার যদি সহযোগিতা করে; কমিশনের বর্তমান প্রশাসনকে কাজের সুযোগ দেয়; তাহলে অক্টোবরের শেষদিকে ৪৪তম বিসিএসের অবশিষ্ট প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আরও কঠিন। কারণ কেন্দ্র ঠিক করা, পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন ইস্যু আছে। তারপরও সরকার ইতিবাচক সাড়া দিলে নভেম্বরে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে। তাছাড়া ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশও সরকারের মনোভাবের ওপর নির্ভর করছে।’
এছাড়া সভায় ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিও ৩০ নভেম্বর প্রকাশের লক্ষ্যে পিএসসির দিক থেকে যত কাজ, তা এগিয়ে রাখার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয় বলেও জানান পিএসসির ওই সদস্য।
জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিলে গত ১৮ জুলাই থেকে বিসিএসসহ নিয়োগ পরীক্ষাগুলো স্থগিত করতে শুরু করে পিএসসি। ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা চলছিল। সেটা স্থগিত করা হয়। ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষাও স্থগিত। ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হলেও খাতা মূল্যায়নসহ অন্যান্য কাজ থমকে আছে।
তাছাড়া বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা, চাকরিরতদের বিভাগীয় পদোন্নতির পরীক্ষাগুলোও স্থগিত করেছে পিএসসি। ১৪ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা শুরুর একদিন আগে বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রথম অর্ধবার্ষিকী বিভাগীয় পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ‘ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (দশম গ্রেড)’ পদের ব্যবহারিক পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন প্রশাসনে চাকরিরত বিভিন্ন ক্যাডারের কয়েক হাজার কর্মকর্তা।
অন্যদিকে অনেক নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফলও আটকে আছে। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টরের প্রায় এক হাজার পদে দীর্ঘদিন আগে পরীক্ষা শেষ হলেও ফল প্রকাশ করা হয়নি। কয়েক মাস ধরে প্রার্থীরা অনশনসহ আন্দোলন করে আসছেন। তাতেও সাড়া মিলছে না। তাছাড়া নার্সিং-মিডওয়াইফারি নিয়োগের পরীক্ষার ফলও আটকে আছে।