বিদেশ থেকে দেশে অর্থ প্রেরণের দুটি পথ খোলা আছে, যার মধ্যে একটি বৈধ অর্থাৎ ব্যাংকিং চ্যানেলে এবং আরেকটি হচ্ছে অবৈধ অর্থাৎ হুন্ডির মাধ্যমে। নগদ বৈদেশিক মুদ্রা যখন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা হয় বা ব্যাংকের হিসাবে জমা রাখা হয়, তখন তা ব্যাংকিং চ্যানেলে চলে যায়। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান খাত প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্স। তবে সরকারের নানা উদ্যোগের পরও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বাড়ছে না রেমিট্যান্স। অতীতে রেমিট্যান্স বাড়াতে হুন্ডি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, কিন্তু হুন্ডি বন্ধ হয়নি। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়লেও প্রবাস আয়ের শতভাগ ব্যাংকের মাধ্যমে আসছে না। হুন্ডি বন্ধ করা গেলে বর্তমানে বছরে আসা ২৫ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স দ্বিগুণ অর্থাৎ ৫০ বিলিয়ন করা সম্ভব। দেশের ডলার সমস্যা সমাধানের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্স। খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়লেও প্রবাস আয়ের শতভাগ ব্যাংকের মাধ্যমে আসছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্স বাড়াতে ১০টি বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স আসে ২১১ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ডলার, মার্চ মাসে আসে ১৯৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ডলার, মে মাসে ২২৫ কোটি ডলার, জুনে ২৫৪ কোটি ডলার, জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ডলার এবং গত আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ডলার। আর চলতি মাসের ২৮ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি। খবরে বলা হয়েছে, বিগত সরকারের আমলে রেমিট্যান্স পাঠাতে সচেতনতা বাড়ানোর পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করেছিল প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বিদেশ থেকে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়াতে হুন্ডি কারবারিদের দৌরাত্ম্য প্রতিরোধে ১০টি প্রতিবন্ধকতার কথাও সেখানে উল্লেখ করা ছিল। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিমত, হুন্ডি ও অন্যান্য মাধ্যমে রেমিট্যান্সের বড় অঙ্কই পাচার হয়ে যাচ্ছে। দেশে যখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আসে অথবা ডলারের বিপরীতে টাকার অস্বাভাবিক দরপতন ঘটে, তখন একটি বিষয় খুব জোরেশোরে আলোচনায় আসে, তা হচ্ছে প্রবাস আয়। বর্তমানে দেশে হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর মাত্রা বেড়ে গেছে। অর্থাৎ প্রবাসীরা এখন ব্যাংকিং চ্যানেলের পরিবর্তে হুন্ডিতে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছেন। হুন্ডির প্রভাব থেকে সরিয়ে প্রবাসীদের অর্জিত শতভাগ অর্থ কিভাবে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রেরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, সেটিই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কিছু পদক্ষেপ নিলেই কাজটি করা সম্ভব। যেসব কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলের পরিবর্তে হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠানো হচ্ছে, সেই পথগুলো বন্ধ করতে হবে। শাস্তির বিধানগুলো কার্যকর করতে হবে। রেমিট্যান্সের টাকা যাতে গ্রাহক দ্রুত পেতে পারে এমন ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যাংকিং খাতের উন্নয়নে ব্যাংকগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। উন্নত বিশ্ব এই হুন্ডির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কঠোর মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনসহ অনেক আইন এবং বিধি-বিধান প্রণয়ন করেছে, সেই আইন প্রয়োগের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করেছে এবং উচ্চমাত্রার জরিমানাসহ শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি করতে হুন্ডি প্রতিরোধ করতে হবে। এ জন্য বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স আনার খরচ কমাতে হবে। রেমিট্যান্সের প্রণোদনার ব্যবস্থাটি চলমান রাখতে হবে। মনিটরিং আরো জোরদার করতে হবে।
হুন্ডি বন্ধে ব্যবস্থা নিলে রেমিট্যান্স হবে দ্বিগুণ
আরো দেখুন
আপেল খেলে যাদের সমস্যা হতে পারে
প্রতিদিনের ডেস্ক:
আপেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এজন্য কথায় বলে, প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষে না। আসলে আপেলের মধ্যে বহু পুষ্টি...
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় আরেক হামাস নেতা নিহত
প্রতিদিনের ডেস্ক:
উত্তর লেবাননের ত্রিপোলির একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের নেতা সাঈদ আতাল্লাহ নিহত হয়েছেন। শনিবার (৫ অক্টোবর) হামাস-সমর্থিত...