বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ক্রমেই বাড়ছে। দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির, বিশেষ করে স্থির আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। সরকার পরিবর্তনের ফলে মানুষের মধ্যে যে প্রত্যাশা জন্ম নিয়েছিল, ক্রমেই তা হতাশায় রূপ নিচ্ছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সর্বাধিক ব্যবহৃত তিনটি খাদ্যপণ্য তথা তেল, চিনি ও আলুর দাম কমছে না। চালের দাম ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। গরিবের আমিষ হিসেবে বিবেচিত ডিমের হালি এখন ৬০ টাকা। দাম কমছে না পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদের মতো পণ্যগুলোর। অন্যদিকে রান্নায় ব্যবহৃত এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডারের দামও ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। সর্বশেষ ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩৫ টাকা বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৪৫৬ টাকা। কিন্তু বাড়ছে না মানুষের আয়। ফলে মানুষকে এখন পরিবারের পুষ্টির সঙ্গে আপস করতে হচ্ছে। খাদ্যগ্রহণ কমিয়ে দিতে হচ্ছে। বাজারে দাম বাড়ানোর জন্য আমাদের ব্যবসায়ীদের অজুহাতের অভাব হয় না। একটু বড় ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দেন। কিন্তু যখন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে, তখনো আমাদের বাজারে সেসব পণ্যের দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকে। অনেকে ডলার, এলসির দোষ দেন। কিন্তু যে পণ্য আমদানি হয় না, তার দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যায়। বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, সমস্যা অন্যখানে। বাজারে নজরদারি কমে গেলে, নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হলে নানা ধরনের সিন্ডিকেট অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে ওঠে। তখনই কোনো কোনো পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, বাজারে সিন্ডিকেট চলমান। এখন এরা নতুন নতুন রূপে আসছে। ৫ আগস্টের পর দুই সপ্তাহের মতো পণ্যের দাম কিছুটা কম ছিল। এরপর ব্যবসায়ীরা বুঝে গেছেন, বর্তমান সরকারও তাঁদের তেমন কিছু করতে পারবে না। এ কারণে তাঁরা তাঁদের কার্যক্রম আগের মতোই অব্যাহত রেখেছেন। অতিমুনাফা করে চলেছেন। গত ২১ আগস্ট বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মেঘনা, সিটি, এস আলম, দেশবন্ধু, এডিবল অয়েল, টি কে গ্রুপসহ বেশ কিছু বেসরকারি কম্পানির প্রতিনিধিরা। উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশন, ভোক্তা অধিদপ্তর, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক ও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বলা হয়েছিল, এক সপ্তাহের মধ্যে সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১২০ টাকা, চিনি প্রতি কেজি ৯০ টাকা ও আলু প্রতি কেজি ২৫ টাকা করতে হবে। কিন্তু দাম কমেনি। এখনো সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা লিটার, চিনি ১৩০ টাকা কেজি এবং আলু ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রতি ডজন ফার্মের লাল ডিমের দাম নির্ধারণ করেছিল ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা। এখন বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৭০ টাকা। ভোক্তার স্বার্থ দেখার দায়িত্ব সরকারের। বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে এবং পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে সরকারকে পরিকল্পিত ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিতে হবে। পণ্যের সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখার পাশাপাশি বিকল্প বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
বাজার অস্থির : দাম কমানোর উদ্যোগ নিন
আরো দেখুন
আজ আধুনিক যশোরের রূপকার মজলুম জননেতা সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী
সুন্দর সাহা
আজ সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আধুনিক যশোরের রূপকার মজলুম জননেতা তরিকুল ইসলামের ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী। আজীবন সংগ্রামী তরিকুল ইসলাম নিষ্ঠুর...
অপরাধে জড়াচ্ছে কিশোর গ্যাং
ঢাকা ও ঢাকার বাইরে দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠছে উঠতি বয়সী কিছু কিশোর। স্কুল-কলেজের গণ্ডি পার হওয়ার আগেই কিশোরদের একটি অংশের বেপরোয়া আচরণ এখন...