১৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

১৮ হাজার শ্রমিকের জন্য সুখবর

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাস আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস জনশক্তি রপ্তানি। মালয়েশিয়া একসময় দেশের অভিবাসী কর্মীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। ১৯৮৯ সাল থেকে নিয়মিতভাবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠানো হচ্ছে। প্রায় আট লাখ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন পেশায় কর্মরত। এ ছাড়া সেখানে লাখ দুয়েকের মতো বাংলাদেশি অবৈধভাবে অবস্থান করছেন, যাঁরা সাধারণত পর্যটন ভিসায় বা অন্য উপলক্ষে কয়েক দিনের ভিসায় মালয়েশিয়ায় এসে থেকে গেছেন বা বেশি পারিশ্রমিকের লোভে কর্মরত স্থান থেকে পালিয়ে অন্যত্র কাজ করছেন। মালয়েশিয়ায় কাজ করতে যাওয়া অনেক শ্রমিক প্রতারণারও শিকার হয়েছেন। গত ৩১ মে বাংলাদেশসহ কর্মী জোগানদাতা ১৪টি দেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্য দিয়ে একটি সিন্ডিকেট বা চক্রের নির্মম দুর্নীতির চিত্র ফুটে ওঠে। গত শুক্রবার এক সংক্ষিপ্ত সফরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ঢাকায় এসেছিলেন। ফিরে যাওয়ার আগে দিয়ে গেছেন একটি সুখবর। প্রতিদিনের কথার খবরে বলা হয়েছে, বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজে যোগ দিতে না পারা প্রায় ১৮ হাজার শ্রমিককে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। গত শুক্রবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ড. ইউনূসের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের ১৮ হাজার শ্রমিকের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা পুরো ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছি। আমাদের শ্রমিক দরকার, তাঁদের আধুনিক দাস হিসেবে গণ্য করা যাবে না।’ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তাঁরা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়, বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক, কারিগরি সহযোগিতা, রোহিঙ্গা ইস্যু, শ্রমবাজারসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় করেন। এ সময় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় যাতে আরো জনশক্তি যেতে পারে সে ব্যাপারে মালয়েশিয়া সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন। গত জুন মাসে ঢাকায় কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সংগঠন ডিকাব সদস্যদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকায় মালয়েশীয় হাইকমিশনার হাযনাহ মো. হাশিম এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ঘিরে সক্রিয় সিন্ডিকেটগুলো বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সৌদি আরব, ওমান, কুয়েত ও মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি কমেছে। তবে ইউরোপের নানা দেশে জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নানা কারণে প্রত্যাশা অনুযায়ী জনশক্তি রপ্তানি হচ্ছে না। এখন নতুন করে আমাদের শ্রমবাজার খুঁজতে হবে। পুরনো বাজারগুলোতে নতুন করে জনশক্তি রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়