শামীম হাসান সুজন, শরণখোলা
বাগেরহাটের শরণখোলায় সিদ্দিকুর রহমান(৪৪) নামের এক দিনমজুরের মৃতদেহ ২ নং খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিনের মাছের ঘেরে পাওয়া গেছে। ৯ অক্টোবর বুধবার আনুমানিক সকাল ৮.১৫ মিনিটের দিকে চেয়ারম্যানের ঘেরে মাছ ধরার সময় লোকজন মৃতদেহ দেখতে পায়। পরে শরণখোলা থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে সিদ্দিকের মৃতদেহ উদ্ধার করে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মোড়েলগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আশিকুজ্জামান। ভুক্তভোগীর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ২ নং খোন্তাকাটা ইউনিয়নের পশ্চিম বানিয়াখালী গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম হাওলাদারের পুত্র দিনমজুর সিদ্দিকুর রহমান হাওলাদার গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ৯ টার দিকে বাড়ী থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। তার স্ত্রী ডালিয়া বেগম বিভিন্ন যায়গায় খোজাখোজির পর তাকে না পেয়ে ৫ অক্টোবর শরণখোলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে। ডালিয়া বেগম আরও জানায়, ওই দিন রাত ৯টার দিকে একই এলাকার সুলতান ফকির নামে এক ব্যাক্তি তাকে মোবাইল ফোনে কাজ আছে বলে ডেকে নেয়। গত ৩দিন ধরে মাছ মারা যাচ্ছে এমন সংবাদে মহিউদ্দিন খানের প্রতিবেশী হাসিব সহ কয়েকজন জাল টানতে ওই ঘেরে যায়। কিছুক্ষণ জাল টানার পর হঠাৎ হাসিবের পায়ে মৃতদেহের স্পর্শ লাগলে তিনি চিৎকার করলে অন্যান্যরা ছুটে আসে। পরে ঘেরের মধ্যে একটি খুটির সাথে তার মৃতদেহ বাধা অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময়ে তারা শরণখোলা থানা পুলিশকে খবর দিলে শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ এএইচএম কামরুজ্জামান খানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনা স্থল থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার এক সমাজ সেবক বলেন, সুলতান ফকির এলাকায় বিভিন্ন চুরির ঘটনার সাথে জড়িত। সে সিদ্দিককে ওই রাতে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পরে থেকে নিখোঁজ থাকায় ধারনা করা হচ্ছে সুলতান সিদ্দিকের মৃত্যুর রহস্যের সাথে জড়িত থাকতে পারে।
এ ব্যাপারে ২ নং খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন বলেন, তার ঘেরে একটি মৃতদেহ পাওয়া গেছে এমন সংবাদ জানার পর তিনি বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন। ঘটনার তদন্তে বাগেরহাট পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ একরাম হোসেন সহ সিআইডি সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। এ ব্যাপারে শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ এএইচএম কামরুজ্জামান খান বলেন, যেহেতু মৃতদেহ পঁচে গেছে তাই ডিএনএ টেষ্টের মাধ্যমে সনাক্ত করতে হবে এটি সিদ্দিকের মৃতদেহ কিনা। তবে সিদ্দিকের মৃত্যুর রহস্যের সাথে সম্পৃক্ত ব্যাক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে এই মুহুর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না। মৃত দেহের ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে।

