মঈন উদ্দিন খান, কোটচাঁদপুর
গ্রাম্য সালিশে ধর্ষনের বিচার করে মামলায় ফেঁসে গেলেন গ্রামের মাতুব্বরেরা। বৃহস্পতিবার (১০-১০-২৪) সন্ধ্যায় ভূক্তভোগীর পিতা বাদি হয়ে কোটচাঁদপুর থানায় এ মামলা করেছেন। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়,কোটচাঁদপুর উপজেলার রাজাপুর গ্রাম। ওই গ্রামের জনৈক্য ব্যক্তির মেয়ে ভূক্তভোগী ওই নারী। সে বুদ্ধি প্রতিবন্দী। এ কারনে স্বামী তাকে তাঁর পিতার বাড়িতে রেখে গেছেন। ওই সংসারে একটা বাচ্চাও আছে তাঁর। সম্প্রতি প্রতিবেশী আমিরুল ইসলামের লালসার শিকার হন সে। আমিরুল তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিয়মিত তাঁর সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক করে আসছিল বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
এতে করে গর্ভবতী হয়ে পড়েন ওই নারী। বিষয়টি জানাজানি হলেন তা ধামাচাপা দিতে গিয়ে গর্ভপাত ঘটনানোর চেষ্টা করেন ধর্ষক আমিরুল ইসলামের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন ও প্রতিবেশী আঞ্জুরা খাতুন। তারা তাকে কবিরাজের ঔষধ খাওয়ান গর্বপাতের জন্য। এরপর সে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় সরগোল পড়ে যায়। এ সময় ধর্ষক আমিরুল ইসলাম গ্রামের মাতুব্বরদের শরণাপন্ন হন। মিমাংসার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন তাদের উপর। একপর্যায় গ্রামের মাতুব্বররা গেল ৬ তারিখ রাতে অভিযুক্তকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ঘটনাটি নিয়ে গেল ১০ অক্টোবর বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ভুক্তভোগীর পিতা বাদী হয়ে ১০ অক্টোবর সন্ধ্যা রাতে মামলা করেন। মামলা নাম্বার ৮,তারিখ -১০-১০-২৪। ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে এজাহার নামীয় ৬ জনকে। এ ছাড়া ২০/২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি ও করা হয়েছে বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সুত্রে। তবে আসামিদের কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এ দিকে ভুক্তভোগীকে পুলিশ হেফাজতে শুক্রবার ডাক্তারি পরিক্ষা সম্পন্ন করানে হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোটচাঁদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সৈয়দ আল মামুন।
তিনি বলেন,বিষয়টি আমার দৃষ্টিতে আসার পর, আমি সহ সাবদারপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল হোসেন ভুক্তভোগীর বাড়িতে যায়। তারা থানায় এসে মামলা করার প্রতিশ্রুতিও দেন। এরপর গ্রাম্য কতিপয় সুবিধা ভোগী ও খারাপ প্রকৃতি মানুষের কু- মন্তণায় থানায় এসে আইনের আশ্রয় না নিয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা গ্রহন করে স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করেন। বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে তা আমার দৃষ্টি গোচর হয়। এরপর আবারও ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে আইনের বিষয়টি বুঝালে, তারা থানায় এসে এজাহার দায়ের করেন।তিনি বলেন,আমরা ভিকটিম মেডিকেল পরিক্ষা সহ আইনী পদক্ষেপ গ্রহন করেছি।
আসামিদের কেউ আটক হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এজাহারের পর থেকে আসামিদের ধরতে পুলিশ সব সচেষ্ট রয়েছে। এছাড়া খুবদ্রুত আসামিদের সকলকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ওই কর্মকর্তা।

