উৎপল মণ্ডল,শ্যামনগর
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের শ্রী শ্রী যশোরেশ্বরী কালী মন্দির থেকে মা কালীর মাথার স্বর্ণের মুকুটের এখন শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো সন্ধান মেলেনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ২৭শে মার্চ ২০২১ সালে কালী মায়ের মন্দিরে পূজা দিতে এসে স্বর্ণের মুকুটটি মা কালীর মাথায় উপহার হিসেবে পরিয়ে দেন। চুরির ঘটনায় জড়িত যুবককে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। যদিও পুলিশ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত দিলীপ ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী রেখা রানীসহ সাতজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ২টা ৪৯ মিনিটে এক যুবক মন্দিরে প্রবেশ করে মা কালীর মাথায় থাকা স্বর্ণের মুকুট খুলে নিয়ে যা। এদিকে স্থানীয়দের দাবি, মন্দিরের সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজে মুকুট চুরির সঙ্গে জড়িত ওই যুবক স্থানীয় নয়। শ্যামনগর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সীমান্ত এলাকায় তার ছবি ছড়িয়ে দিলেও কোনোভাবে তাকে কেউ শনাক্ত করতে পারেনি। সিসি ক্যামেরায় জিন্সের প্যান্ট ও সাদা টি- শার্ট পরিহিত যুবকের একার ছবি ধরা পড়লেও চুরির ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত বলে স্থানীয়দের দাবি। তবে একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, শনিবার ও মঙ্গলবার পূজার জন্য সেই মুকুট মন্দিরে নিয়ে আসা হতো। তবে বৃহস্পতিবার সেই মুকুট চুরি হলেও মঙ্গলবার পূজার পর কেন মুকুট বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
মহারাজা প্রতাপাদিত্য স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সভাপতি জয়দেব বিশ্বাস বলেন, নিরাপত্তাজনিত দুর্বলতার সুযোগে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এত গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান সম্পদ হওয়া সত্বেও কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, সার্বিক দৃশ্য দেখার ও জানার পর মনে হয়েছে, চুরির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ শ্যামনগর উপজেলা শাখার সদস্য সচিব উৎপল মন্ডল বলেন, পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এমন কাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, যারা মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা উচিত। শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান বলেন, মুকুট চুরির ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করেনি। তবে ফুটেজে দৃশ্যমান যুবকের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মন্দিরের পুরোহিত ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ কয়েকজনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মন্দিরের পুরোহিত একেক সময় একেক ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন। মন্দির কমিটির নেতারা ঢাকায় থাকেন। এ জন্য চুরির ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। এখানে এসে তারা মামলা করবেন বলে জানান ওসি।

