২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের যশোরেশ্বরী কালী মন্দির পরিদর্শন: মন্দির ত্যাগের পর দু পক্ষের হাতাহাতি।

উৎপল মণ্ডল, শ্যামনগর
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী যশোরেশ্বরী কালী মন্দির থেকে কালী মায়ের মাথার স্বর্ণের মুকুট সাম্প্রতিক চুরি হওয়ার ঘটনায় মন্দির পরিদর্শন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব, ক্রীড়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় মন্দিরে উপস্থিত হয়ে তিনি চুরি হওয়া স্বর্ণের মুকুটের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন এবং মন্দির কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেন। মন্দির পরিদর্শন কালে তিনি বলেন, “মন্দিরে এমন চুরির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। খবর পাওয়ার পরই আমরা প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই চুরির ঘটনার তদন্ত করে স্বর্ণের মুকুট উদ্ধার সহ চোরকে আটক করা হয়।”
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ পরিদর্শন শেষে দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে কথা বলে মন্দির ত্যাগ করার পর মন্দির কর্তৃপক্ষ ও সার্বজনীন দাবিদার সনাতন ধর্মালম্বীদের মধ্যে বাকবিতন্ডের সৃষ্টি হয়। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি ঠান্ডা করে। সার্বজনীন মন্দিরের দাবিদার সনাতন ধর্মালম্বীদের পক্ষে মহারাজা প্রতাপাদিত্য স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সভাপতি জয়দেব বিশ্বাস বলেন, আজ যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া মন্দির পরিদর্শনে আসলে। এসময় নিরাপত্তাজনিত দুর্বলতার সুযোগে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এত গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান সম্পদ হওয়া সত্বেও কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে পারেনি বলে মন্তব্য করায় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে জ্যোতি চট্টোপাধ্যায় ও তার ভাড়াটিয়া বাহিনী যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ভিন্ন ধর্মালম্বী তারা আমাদের উপর চড়াও হয়। এবিষয়ে জানতে চাইলে মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষে জ্যোতি চট্টোপাধ্যায় সম্পূর্ণ ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে ভিডিও ফুটেছে দেখা গেছে বিশৃঙ্খলা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বহিরাগতরা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এ ঘটনায় শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি,তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান জানান, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা মন্দির পরিদর্শন করে বেরিয়ে যাওয়ার পর মন্দির কর্তৃপক্ষ ও সনাতন ধর্মের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে একটু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি শান্ত করে। পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডাঃ সঞ্জীব দাশ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত, শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ তাইজুর ইসলাম, জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাস্টার আব্দুল ওয়াহেদ সহ বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের সভাপতি, সম্পাদক বৃন্দ। কালী মন্দির পরিদর্শনের পর উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বিভিন্ন দুর্গা মন্দির পরিদর্শন করে, মুন্সীগঞ্জে অবস্থিত আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম হয়ে সুন্দরবন ভ্রমণে যান। এর আগে তিনি সাতক্ষীরা মিনি স্টেডিয়ামের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেন এবং পারুলিয়া জেলেপাড়া ও গাজীরহাট পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন। এছাড়াও, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ আসিফ হাসানের কবর জিয়ারত করে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সমবেদনা জানান।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়