চারদিকের অনেক খারাপ খবরের ভিড়ে সুখবর হচ্ছে, দেশে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় ৬.৭৮ শতাংশ বেড়েছে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্য বা ব্যালান্স অব পেমেন্ট। এ সূচকের উদ্বৃত্ত নিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছর শুরু হয়েছে। আমদানি কমায় পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতির পরিমাণও কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৯০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে গত বুধবার ইপিবি রপ্তানির যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে দেশের রপ্তানি আয় ৬.৭৮ শতাংশ বেড়ে ৩.৫২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এটি ছিল ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের মধ্যে রপ্তানি আয় ৫.০৪ শতাংশ বেড়ে ১১.৩৭ বিলিয়ন হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১০.৮২ বিলিয়ন। প্রাপ্ত তথ্য বলছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৯৭ মিলিয়ন ডলার। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬.৮২ শতাংশ। বিশ্ববাজারে আমাদের কৃষিপণ্যের চাহিদা ও সম্ভাবনা আছে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের শাক-সবজি ও ফলমূলের চাহিদা রয়েছে। প্লাস্টিকপণ্য ২৭ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা এক বছর আগের একই সময়ের ২১ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৩২.৫০ শতাংশ বেশি। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি আয় ১৮.৫৯ শতাংশ বেড়ে ৮২ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্যের আয় ১৭.৭৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৬৭ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। বিশেষায়িত টেক্সটাইল সেক্টর ৩৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। রপ্তানি বহুমুখীকরণের প্রধান শর্ত পণ্য বৈচিত্র্যকরণ। আমাদের এখন রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে। রপ্তানির ক্ষেত্রে অপ্রচলিত পণ্যও সম্ভাবনাময় হতে পারে।
ব্যালান্স অব পেমেন্টে উদ্বৃত্ত নিয়ে শুরু হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছর। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ১০ লাখ ডলার। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এই সূচকে ৬১ কোটি ডলারের ঘাটতি ছিল। রপ্তানির ক্ষেত্রে অপ্রচলিত পণ্যও সম্ভাবনাময় হতে পারে। বিশ্ববাজারে আমাদের কৃষিপণ্যের চাহিদা ও সম্ভাবনা আছে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের শাক-সবজি ও ফলমূলের চাহিদা রয়েছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে দেশে উৎপাদিত সিরামিক পণ্য। গত অর্থবছরে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প সামনে এগিয়ে গেছে মূলত নন-ট্র্যাডিশনাল মার্কেট বা অপ্রচলিত বাজারের ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশ শুরু থেকেই বিপুল বাণিজ্য ঘাটতির দেশ হিসেবেই পরিচিত ছিল। এই প্রবৃদ্ধি আমাদের আশান্বিত করে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশ এগিয়ে চলেছে, দেশপ্রেমিক যেকোনো মানুষের কাছে তা স্বস্তিকর, আনন্দদায়ক। রপ্তানি বহুমুখীকরণের প্রধান শর্ত পণ্য বৈচিত্র্যকরণ। আমাদের এখন রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে। পাশাপাশি বিকল্প ও নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে।