প্রতিদিনের ডেস্ক॥
ভারত সোমবার জানিয়েছে, কানাডা তাদের রাষ্ট্রদূত ও অন্য কূটনীতিকদের ‘সন্দেহভাজন ব্যক্তি’ হিসেবে তদন্ত করছে, যা নিয়ে তারা কড়া সমালোচনা করেছে। এই তদন্তের পটভূমিতে রয়েছে ২০২৩ সালে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা কানাডা থেকে একটি কূটনৈতিক নোট পেয়েছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতীয় হাই কমিশনারসহ কিছু কূটনীতিককে চলমান তদন্তে ‘সন্দেহভাজন ব্যক্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। হরদীপ সিং নিজ্জর ছিলেন কানাডীয় নাগরিক, যাকে হত্যার পেছনে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছিলেন, ‘বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ’ রয়েছে। সেই ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক চরম উত্তেজনায় পৌঁছয়। ১৯৯৭ সালে কানাডায় অভিবাসী হওয়া নিজ্জর ২০১৫ সালে কানাডীয় নাগরিকত্ব পান। তিনি ভারতের ভেতরে ‘খালিস্তান’ নামে একটি আলাদা শিখ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে আন্দোলন করছিলেন। ভারত তাকে সন্ত্রাসবাদ ও হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে খুঁজছিল। ২০২৩ সালের জুনে কানাডার ভ্যাংকুভারে একটি শিখ মন্দিরের পার্কিং লটে নিজ্জরকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় চারজন ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারত সোমবার কানাডার এ অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘রাজনৈতিক স্বার্থে ভারতের বদনাম করার কৌশল’ বলে আখ্যা দিয়েছে। ২০২৩ সালে এই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের পর ভারত সাময়িকভাবে কানাডার জন্য ভিসা প্রদান বন্ধ করে এবং অটোয়াকে তাদের কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করে। সোমবার ভারত হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, কানাডার এমন পদক্ষেপ অব্যাহত থাকলে ভারত ‘আরো ব্যবস্থা’ নিতে পারে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কানাডা সরকার যে মিথ্যা অভিযোগের গল্প তৈরি করছে, তার প্রতিক্রিয়ায় ভারত উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার রাখে।’ কানাডায় প্রায় সাত লাখ ৭০ হাজার শিখের বসবাস, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ শতাংশ। এদের মধ্যে কিছু অংশ খালিস্তানের পক্ষে সরব। এ ছাড়া ২০২৩ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এক ভারতীয় নাগরিককে মার্কিন মাটিতে একটি হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করে। ওই ব্যক্তি তখন চেক প্রজাতন্ত্রে বসবাস করছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা আদালতের নথিতে উল্লেখ করেন, এই হত্যার পরিকল্পনায় একজন ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাও জড়িত ছিলেন।
সূত্র : এএফপি