প্রতিদিনের ডেস্ক॥
প্রশান্ত মহাসাগরীয় (এশিয়া মহাদেশ) অঞ্চলে সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক প্রযুক্তির বাজার ২০২৭ সালের মধ্যে ৬০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে।প্রশান্ত মহাসাগরীয় (এশিয়া মহাদেশ) অঞ্চলে সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক প্রযুক্তির বাজার ২০২৭ সালের মধ্যে ৬০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। এ প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে ছোট ও মাঝারি ব্যবসা (এসএমবি) এবং বাজার ব্যবস্থার মধ্যবর্তী কোম্পানিগুলো। বাজার গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) গত সপ্তাহে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। আইডিসি বলছে, ২০২৭ সালের মধ্যে নিরাপত্তা বিষয় পণ্য এবং সেবায় এসএমবি ও বাজার ব্যবস্থার মধ্যবর্তী কোম্পানিগুলো খরচ করতে পারে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
আইডিসির প্রতিবেদনে মূলত জাপানসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এসএমবি ও বাজার ব্যবস্থার মধ্যবর্তী কোম্পানিগুলোর সাইবার নিরাপত্তা বাজার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কারণ প্রতিবেদন বলছে, এসব ব্যবসা এ অঞ্চলের মোট নিরাপত্তা ব্যয়ের ৪৬ শতাংশের জন্য দায়ী। বাজারটি সামনে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে এবং ২০২৭ সালের মধ্যে প্রতি বছর ১৩ শতাংশ হারে আয় ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বিশ্বব্যাপী সাইবার হুমকি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ করে র্যানসমওয়্যার আক্রমণের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এশিয়া কিংবা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বড় কোম্পানি ও এসএমবি সাইবার নিরাপত্তায় বিনিয়োগে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আইডিসি সিকিউরিটি স্পেন্ডিং গাইড অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এ খাতে মোট বিনিয়োগ ছিল ৭৬০ কোটি ডলার, যা এটি প্রতি বছর ১০ দশমিক ৫ শতাংশ হারে বেড়ে ২০২৭ সালের মধ্যে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে বলে ধারণা করছে আইডিসি। আইডিসি বলছে, সাইবার হুমকি মোকাবেলায় অঞ্চলভিত্তিক প্রচেষ্টা থাকলেও রাষ্ট্রগুলোর জন্য নিরাপত্তার বিষয়ে কার্যকরভাবে একসঙ্গে কাজ করা কঠিন হচ্ছে। কারণ সব অঞ্চলে একজাতীয় নিরাপত্তা মানের অভাব রয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদন বলছে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের উত্তেজনা ও এআই দ্বারা চালিত হুমকির কারণে সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসব অঞ্চলের দেশগুলো তাদের সাইবার নিরাপত্তা ক্ষমতা জোরদার করার জন্য অংশীদারত্ব গঠন করছে। অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও চীন এ খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আইডিসির এশিয়া-প্যাসিফিক এসএমবি ও ডিজিটাল নেটিভ ব্যবসা প্রোগ্রামের গবেষণা ব্যবস্থাপক সুপ্রিয়া ডেকা বলেন, ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিবর্তনশীল পরিবেশে সফল হতে হলে নিরাপত্তা বিষয় পণ্য ও সেবা বিক্রেতাদের বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে হবে। নতুন চিন্তাভাবনা গ্রহণ এবং স্থানীয় চাহিদার জন্য উপযোগী নিয়ম মেনে চলার সমাধান তৈরি করা ব্যবসায় বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এছাড়া স্থানীয় বিক্রেতা, স্টার্টআপ ও সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব গঠন করলে সাইবার নিরাপত্তায় সহযোগিতামূলক একটি পন্থা গড়ে তোলা সম্ভব।’
ক্যানালিসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) সাইবার নিরাপত্তা প্রযুক্তিপণ্য ও পরিষেবার বাজার আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। এতে বাজারের আকার দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ১০০ কোটি ডলার। ক্যানালিসের প্রধান বিশ্লেষক ম্যাথিউ বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের তথ্যপ্রযুক্তি কাঠামোকে ক্লাউড ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) জন্য পুনর্গঠন করছে। একই সঙ্গে তাদের সাইবার নিরাপত্তাকেও পুনর্গঠন করতে হবে, যাতে তারা আরো স্থিতিশীল হতে এবং র্যানসমওয়্যার আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।’