২৭শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১২ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন: জয়-মুশফিকের লড়াইয়ে ‘নতুন জীবন’ বাংলাদেশের

প্রতিদিনের ডেস্ক॥
দলীয় মাত্র ৪ রানের মাথায় পরপর ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ইনিংস হারের শঙ্কা জেঁকে বসেছিল পুরোদমে। যদিও মাহমুদুল হাসান জয় আর নাজমুল হোসেন শান্তর পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় কাটায় বাংলাদেশ। শেষমেশ অধিনায়ক শান্ত ফিরে গেলেও আর কোনো উইকেট না হারিয়েই দিন শেষ করেছে টিম টাইগার্স। প্রথম ইনিংসে নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতার পর প্রোটিয়াদের বড় লিডে চাপা পড়েছিল বাংলাদেশ। ইনিংস হার এড়াতে অন্তত ২০২ রান করতে হবে তাদের। এ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে ৩ উইকেটে ১০১ রান করেছে স্বাগতিকরা। সফরকারীদের চেয়ে এখনো পিছিয়ে আছে ১০১ রানে। ৮০ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত আছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। অন্য প্রান্তে ২৬ বলে ৩১ রান করে টিকে আছেন চলমান টেস্টেই প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে টেস্টে ৬ হাজার রানের ক্লাবে নাম লেখানো মুশফিকুর রহিম। এ দুজনের ব্যাটেই অনেকটা নির্ভর করছে এই টেস্টে বাংলাদেশের ভাগ্য। সাকিব আল হাসান ইস্যুতে পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা মিরপুর স্টেডিয়াম। সাধারণত ম্যাচ ডে’তে স্টেডিয়ামের বাইরে সমর্থকদের আনাগোনা, হকারদের হাঁকডাকের পরিচিতটা দৃশ্যটা যে কারণে এবার তেমন একটা নেই। গ্যালারিতেও দর্শক উপস্থিতি আশঙ্কাজনক কম। এর মধ্যেও যারা মাঠে এসেছেন, তারাও স্বাগতিক দলের ব্যর্থতায় তেমন উদযাপনের সুযোগ পাচ্ছেন না। এর মধ্যেই মিরপুর টেস্টের মাত্র দ্বিতীয় দিনেই খেলার নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। যদিও বাংলাদেশ প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়েছে বেশ ভালোভাবেই। এ ছাড়া আলোকস্বল্পতার কারণে বেশ কিছু ওভারের খেলা বাকি রেখেই দিনের খেলা শেষের ঘোষণা করে দেন আম্পায়ার। সোমবার মিরপুর শেরে বাংলায় দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১০৬ রানেই অলআউট হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। জবাবে কাইল ভেরেইনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে ৩০৮ রানে থামে প্রোটিয়া বাহিনী। তাদের লিড দাঁড়ায় ২০২। প্রোটিয়া এই উইকেটকিপার ব্যাটারের ১৪৪ বলে ১১৪ রানের এই ইনিংসটাই যেন ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে অনেকটাই। কাইল ভেরেইনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে অনেকটাই। মিরপুরের কন্ডিশন বিবেচনায় প্রোটিয়াদের দেওয়া ২০২ রানের লিডটা পাহাড়সমই। এই টেস্ট বাঁচাতে দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ানোর বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। যদিও শুরুটা হয় চিরাচরিত নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতায়। দলীয় মাত্র ৪ রানের মাথায় দুই ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই সাদমান ইসলামকে ফেরালেন কাগিসো রাবাদা। কিছুটা বাড়তি বাউন্সের বলে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন টাইগার এই ওপেনার। ব্যাট-প্যাড হয়ে বল চলে যায় শর্ট লেগে দাঁড়ানো টনি ডি জর্জির হাতে। ৭ বল খরচায় মোটে ১ রান করেন সাদমান। একই ওভারে মুমিনুল হকের উইকেটটাও উপড়ে ফেলে বিপদ আরও বাড়ালেন রাবাদা। জায়গায় দাঁড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মুমিনুল। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় তৃতীয় স্লিপে দাঁড়ানো উইয়ান মুল্ডারের হাতে। ৩ বল খেলে রানের খাতা খুলতেই পারলেন না তিনি। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টাইগার এই ব্যাটার কতটা নড়বড়ে একটা পরিসংখ্যানে দেখা যাক। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ ৯ ইনিংসে মাত্র ৩২ রান করতে পেরেছেন মুমিনুল। ভুলে যাওয়ার মতোই পারফরম্যান্স। মাত্র ৪ রানের মাথায় দুই ব্যাটারকে হারানোর পর মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে দলের হাল ধরেছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনের জুটি থেকে আসে ৯৮ বলে ৫৫ রান। এখন পর্যন্ত চলমান টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি। যদিও ইনিংস বড় করতে পারেননি শান্ত। কেশভ মহারাজের করা আউটসাইড অফ স্টাম্পের বলটা ঠিকঠাক খেলতে পারেননি শান্ত। ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল গিয়ে আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ারের জন্য কাজটা কঠিন ছিল না। এলবিডব্লিউ হয়ে ২৩ রান করে বিদায় নেন টাইগার কাপ্তান। শান্তর বিদায়ের পর আর কোনো বিপদ হতে দেননি জয়-মুশফিক জুটি। এ জুটির রান এখন পর্যন্ত ৫০ বলে ৪২ ছাড়িয়েছে। চলমান টেস্ট বাঁচাতে বড় জুটি গড়ার বিকল্প নেই বাংলাদেশের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১০৬, দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৩০৮ রান
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস : ২৭.১ ওভারে ১০১/৩।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়