১৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

বাড়ছে হত্যা সন্ত্রাস চাঁদাবাজি

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাড়ছে খুনখারাবি, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, রাহাজানি, লুটতরাজের মতো ঘটনা। ফলে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তার অভাববোধ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। জানা যায়, সারা দেশেই অপরাধ কর্মকাণ্ড বাড়ছে। প্রায় প্রকাশ্যে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। গত দুই মাসে সারা দেশে ৬২৫ জন নিহত হওয়ার তথ্য মিলেছে। তবে রাজধানী ও চট্টগ্রামের অপরাধচিত্র বেশি খারাপ। প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় হত্যা, ছিনতাই, দখল, চাঁদাবাজিসহ তুচ্ছ কারণে পিটিয়ে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন স্বৈরাচার পতনের এক দফা আন্দোলনে রূপ নিলে সারা দেশে ব্যাপক সংঘাতের ঘটনা ঘটে। বহু থানা, পুলিশ ফাঁড়ি এবং কয়েকটি কারাগারেও হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় আন্দোলনকারীদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা দুষ্কৃতকারীরা প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র লুট করে। এর মধ্যে কিছু অস্ত্র উদ্ধার হলেও আরো অনেক অস্ত্র দুষ্কৃতকারীদের কাছে রয়ে গেছে। তারা খুন, ডাকাতি, লুটতরাজে এসব অস্ত্র ব্যবহার করছে। পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, অবৈধ অস্ত্রে খুনাখুনির অভিযোগ পেয়ে তদন্ত চলছে। সেই সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করেছে। যৌথ অভিযানে গত ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৩১৮টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এই সময়ে গ্রেপ্তার হয়েছে ১৭৪ জন সন্ত্রাসী। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে রিভলভার ১৯টি, পিস্তল ৭৬টি, রাইফেল ২২টি, শটগান ৩৭টি, পাইপগান আটটি, শ্যুটার গান ৪৩টি, এলজি ৩১টি, বন্দুক ৪৮টি, একে-৪৭ একটি, এসএমজি পাঁচটি, গ্যাসগান চারটি, এয়ারগান ১০টি, এসবিবিএল ১০টি, টিয়ার গ্যাস লঞ্চার দুটি এবং থ্রি-কোয়ার্টার দুটি। খবরে প্রকাশ, গত ৫ আগস্ট বগুড়া সদর থানা থেকে ৩৯টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রায় আট হাজার রাউন্ড গুলি খোয়া যায়। এ পর্যন্ত মাত্র ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র কাদের কাছে? তারা এসব অস্ত্র দিয়ে কী করছে? পুলিশি কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় চোরাচালান হয়ে আসা আগ্নেয়াস্ত্রের কেনাবেচাও বেড়েছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়। মানবাধিকারকর্মী ও অপরাধ বিশ্লেষক নুর খান বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারলে সমাজে হানাহানি আরো বাড়বে। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। এরই মধ্যে গুলিতে অনেক মানুষ মারা গেছে। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’ তিনি দ্রুত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের দাবি জানান। নিরাপদে এবং মানসম্মান নিয়ে বসবাস করা মানুষের মৌলিক অধিকার। আর মানুষের সেই মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আমরা চাই, দ্রুততম সময়ে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হোক। পুলিশি কার্যক্রম জোরদার করা হোক। সমাজে শান্তি ফিরে আসুক।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়