১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

মানবাধিকার পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি হোক

বাংলাদেশে মানবাধিকারের ঘাটতি বা সংকট নিয়ে অতীতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। অপহরণ, গুম, খুনসহ নানাভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার ঘটনাগুলো নিয়ে বাংলাদেশেও মানুষের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ছিল। বলা যায়, সেসবেরই পরিণতি হিসেবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের মানুষ চায় বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি হোক। আর সেই আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের প্রধান ভলকার তুর্কের কথায়। তিনি ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সংঘটিত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি বলেছেন, হত্যাকাণ্ড যে-ই ঘটাক না কেন, তার তদন্ত হতে হবে। কোনো ধরনের ‘মব জাস্টিস’ গ্রহণযোগ্য নয়। কোনো হত্যাকাণ্ডেই দায়মুক্তি দেওয়ার সুযোগ নেই। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডেরই তদন্ত হতে হবে। দুই দিনের বাংলাদেশ সফরের শেষ দিন গত বুধবার ঢাকার একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব ঘটনা ঘটেছিল, জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান মিশন সেসব তদন্ত করছে। এই মিশন গত ৫ থেকে ১৫ আগস্ট সংখ্যালঘুদের ওপর যেসব হামলার অভিযোগ রয়েছে, সেসব অভিযোগও তদন্ত করছে। আন্দোলনের সময় অনেক পুলিশও নিহত হয়েছে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডসহ অন্য কিছু নিহতের ঘটনায় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা না নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বা কার্যত দায়মুক্তি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ভলকার তুর্ক বলেন, ‘যেকোনো হত্যার ক্ষেত্রে হত্যা যে-ই করুক না কেন, তদন্ত হতে হবে। এটি খুবই স্পষ্ট। সব হত্যারই তদন্ত হতে হবে, এটি মানবাধিকারের চাহিদা। দায়মুক্তি আছে এমন কোনো হত্যাকাণ্ড আমরা হতে দিতে পারি না।’ গত আগস্টে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া ‘মব জাস্টিস’ প্রসঙ্গে ভলকার তুর্ক বলেন, ‘আরেকজন মানুষকে আঘাত বা সহিংসতা যে-ই করুক না কেন, অবশ্যই তার তদন্ত হতে হবে। কোনো ধরনের মব জাস্টিস গ্রহণযোগ্য নয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হওয়া দরকার। প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার। তা না হলে সহিংসতা হবে। বিশ্বের অনেক জায়গায় আমরা দেখি।’ বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন প্রসঙ্গে ভলকার তুর্ক বলেন, ‘আইন ও আদালত প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান বিবেচনায় এখানে ঘাটতি আছে। এগুলোর সুরাহা হওয়া প্রয়োজন।’ আমরা চাই, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশ্বমানের হোক। মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনা বিচারের আওতায় আসুক এবং দোষীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাক।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়