প্রতিদিনের ডেস্ক:
ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা তহবিলের অর্থছাড়ে তড়িঘড়ি করছে মার্কিন প্রশাসন। বুধবার (৬ নভেম্বর) এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, নবনির্বাচিত ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা বুঝে নেওয়ার আগেই জেলেনস্কি সরকারের শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনের জন্য যতটুকু সম্ভব সর্বোচ্চ শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সেই লক্ষ্যেই বাইডেন প্রশাসন অগ্রসর হচ্ছে। ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তায় প্রবল আপত্তি রয়েছে ট্রাম্পের। এই ইস্যুতে নিয়মিত বাইডেনের কড়া সমালোচনা করে গেছেন তিনি। এছাড়া, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘বিশ্বের সেরা বিক্রেতা’ (ওয়ার্ল্ড’স গ্রেটেস্ট সেলসম্যান) বলে আখ্যায়িত করেছেন ট্রাম্প। সবমিলিয়ে, সামনের বছর থেকে ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা থেমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।২০২৩ সাল থেকে প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের আর নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। এবার এখন পর্যন্ত ভোট গণনা পুরোপুরি সম্পন্ন না হলেও, সিনেটে ইতোমধ্যে ৫২ আসন দখলে নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে গেছে রক্ষণশীলরা। আর প্রতিনিধি পরিষদেও রয়েছে তাদেরই আধিপত্য বিস্তারের আভাস। ফলে, কিয়েভে মার্কিন সহায়তার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর পার্লামেন্টও যদি রিপাবলিকানদের দখলে যায়, তবে সহায়তা প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে ইউক্রেন।গত এপ্রিলে ইউক্রেনের জন্য নয়শ’ কোটি মার্কিন ডলার আর্থিক মূল্যের সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানদের আপত্তির কারণে এই উদ্যোগ সফল করতে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল ডেমোক্র্যাটদের। তহবিলের ৪৩০ কোটি ডলার এখনও ছাড় করানো বাকি রয়ে গেছে।সম্পূর্ণ আর্থিক সহায়তা পেলে ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা যথেষ্ট বৃদ্ধি পাবে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।নির্বাচনি প্রচারণা চালানোর সময় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় থাকলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করতেন না। তিনি আরও বলেছেন, ওভাল অফিসে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি যুদ্ধ থামাতে পারবেন।রয়টার্সকে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুদ্ধ থামাতে ইউক্রেনের হয়ত রাশিয়ার কাছে কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তার এই পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করেছে কিয়েভ।ইউক্রেনকে সাময়িক সহায়তা দেওয়া নিয়ে সমালোচনায় সরব ছিলেন নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিনেটর জেডি ভ্যান্স। তিনি বলেছেন, সরকারি তহবিলের অর্থ অভ্যন্তরীণ খাতে খরচ করলে বরং মার্কিনিরা লাভবান হতেন।

