প্রতিদিনের ডেস্ক:
অনেক ধরনের ফল কিংবা সবজি দিয়ে আচার করা যায়। মরিচ, রসুনের আচারও হয়। এসব আচার থেকে নানা পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। যদিও আচার করা হলে ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়, তবু বাকি পুষ্টি উপাদানের গুরুত্ব নেহাতই কম নয়। সেদিক বিবেচনা করলে আচার পুষ্টিকর খাদ্য।কিন্তু মুশকিল বাধায় আচারে ব্যবহৃত কিছু উপকরণ; যেমন তেল, চিনি, লবণ। এই তিন উপাদানের যেকোনোটির আধিক্যই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অন্তরায়। আর অনেক আচারেই তিনটি উপকরণ প্রচুর পরিমাণে থাকে।তাই আচার খেতে হবে পরিমিত। না হলে ওজন বাড়তে পারে, দেখা দিতে পারে নানা রোগের ঝুঁকি। চিনির বিকল্প হিসেবে গুড় ব্যবহার করলেও কিন্তু লাভ নেই। আচারের ভালোমন্দ নানা দিক নিয়ে বলছিলেন রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেহানা বেগম।আচারে তেল, চিনি বা গুড় ব্যবহার করা হলে স্বাভাবিকভাবেই তাতে ক্যালরির মাত্রা হয় বেশিআচারে তেল, চিনি বা গুড় ব্যবহার করা হলে স্বাভাবিকভাবেই তাতে ক্যালরির মাত্রা হয় বেশি। এসবের পরিমাণ যে আচারে যত বেশি, তাতে ক্যালরির মাত্রাও তত বেশি। অর্থাৎ, আচার যত মিষ্টি ও তৈলাক্ত হবে, ততই তার ক্যালরির মাত্রা বেশি হবে। আর যেসব খাবার থেকে বেশি পরিমাণ ক্যালরি পাওয়া যায়, সেগুলো খেলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা তো থাকেই।তাহলে কি আচার বাদ ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখেও কিন্তু সামান্য আচার খাওয়া যেতে পারে, যদি তাতে ক্যালরির মাত্রা থাকে কম। মিষ্টি স্বাদের আচার বা বেশি তেল দেওয়া আচার এড়িয়ে চলুন। মনে রাখবেন, কেউ কেউ টক ফল দিয়ে আচার বানানোর সময় টক ভাবটা কমাতে বেশ খানিকটা চিনি যোগ করেন। ওই আচার খাওয়ার সময় সেই চিনিও কিন্তু আপনি গ্রহণ করছেন। তাই ওজন বাড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তার চেয়ে কেবল সিরকা আর সামান্য লবণ দিয়ে তৈরি আচার খেতে পারেন। অর্থাৎ, তেল, চিনি বা গুড়ের মতো উপকরণ বাদ দিয়ে তৈরি করা আচার খাওয়া যেতে পারে। তাতে স্বাদও পাবেন, স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।ওজন কমাতে আচার যখন উপকারীখাবারের সঙ্গে সামান্য আচার খেলে আপনার উপকারও হতে পারে। কীভাবে? ওজন কমাতে চাইলে মূল খাবারেও তেলের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে। কিন্তু সেদ্ধ কিংবা কম তেলে রান্না করা খাবার অনেকেই খেতে পারেন না। রসনার তৃপ্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ওজন নিয়ন্ত্রণ করাটাকে অত্যন্ত দুঃসাধ্য ব্যাপার বলে মনে হয়। কিন্তু কম স্বাদের খাবারের সঙ্গে মাঝেমধ্যে সামান্য আচার যোগ করে খাওয়া হলে আপনি সেই কম স্বাদের খাবারটাও খেতে পারবেন পর্যাপ্ত।ডায়াবেটিস কিংবা দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি আচারের বিভিন্ন উপকরণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। তাই তাঁদের জন্য নির্দেশিত খাদ্যতালিকার বাইরে আচারজাতীয় খাবার খাওয়া যাবে কি না, তা বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্যও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে আচারের বাড়তি লবণ।