১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

সঞ্চয়পত্রে আগ্রহ বাড়ছে

প্রতিদিনের ডেস্ক:
চলতি অর্থবছরের শুরু (জুলাই) থেকে ইতিবাচক ধারা ফিরে আসে জাতীয় সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে। অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরেও সে ধারা অব্যাহত ছিল। এ সময়ে মানুষ সঞ্চয়পত্র ভাঙার চেয়ে কিনেছেন বেশি। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের অধিকাংশ সময়েই যেটা নেতিবাচক ধারায় ছিল।বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ সালের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। এ মাসে আগের সুদ-আসল পরিশোধ করেও ৪ হাজার ১০৯ কোটি টাকা ইতিবাচক ছিল। আর চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-আগস্ট-সেপ্টেম্বর) আগের আসল-সুদ পরিশোধ করেও ৮ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা ইতিবাচক দেখা গেছে।গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির ধারা ছিল নেতিবাচক। ওই সময়ে বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল ১৪৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। একই অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল ১ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টেও সঞ্চয়পত্র বিক্রি ইতিবাচক ধারায় ছিল। ওই মাসে আগের সুদ-আসল পরিশোধ করেও ২ হাজার ৩৬ কোটি টাকা ইতিবাচক ছিল। এমনকি চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়েও সঞয়পত্র বিক্রি ছিল ইতিবাচক ধারায়। ওই মাসে আগের সুদ-আসল পরিশোধ করেও ২ হাজার ১৮৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ইতিবাচক ছিল।গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি (ঋণাত্মক) ৩ হাজার ৩৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ ৩ হাজার ৩৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে।খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানুষ এখন সঞ্চয়পত্রকে বেশি নিরাপদ মনে করছেন। কিছু ব্যাংক গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দিতে না পারায় এমনটা হয়েছে। এ কারণে মানুষ বাড়তি টাকায় সঞ্চয়পত্র কিনছে।২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১২ মাসে (জুলাই-জুন) সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি ঋণাত্মক ধারায় হয়েছে। গত অর্থবছরের ১২ মাসে আগের আসল ও সুদ বাবদ ২১ হাজার ১২৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে। অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) সঞ্চয়পত্র বিক্রির ধারা ইতিবাচক ছিল। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে টানা নেতিবাচক ধারায় চলে যায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি। যেটা অর্থবছরের শেষ মাস জুন পর্যন্ত চলে।তথ্যমতে, গত অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি ৫ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা ইতিবাচক ছিল। এরপর থেকে টানা নিট বিক্রি ঋণাত্মক হতে থাকে। গত অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে ঋণাত্মক হয় ১৪৭ কোটি, অক্টোবরে ১ হাজার ৪০ কোটি, নভেম্বরে ১ হাজার ৫৫৪ কোটি, ডিসেম্বরে ২ হাজার ২০৪ কোটি, জানুয়ারিতে ১ হাজার ২৮৭ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৫৪১ কোটি, মার্চে ৩ হাজার ৬৫৩ কোটি, এপ্রিলে ২ হাজার ১০৩ কোটি ও মে মাসে ৩ হাজার ৯৪ কোটি টাকা ঋণাত্মক হয়।অন্যদিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ কমবে, তা আন্দাজ করেই সরকার ঋণ নেওয়া কমিয়ে দেয়। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সরকারের নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৮ হাজার কোটি টাকা। যা আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার কোটি টাকা। আর সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৩২ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছিল। ওই পুরো অর্থবছরের শেষে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। আর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়