২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট জয় বাংলাদেশের

প্রতিদিনের ডেস্ক॥
কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট জিততে হলে ইতিহাস গড়তে হতো স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। কারণ এই মাঠে ২১২ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই। এবার উইন্ডিজের লক্ষ্য ছিল ২৮৭ রানের। তবে টাইগার বাঁহাতি স্পিনার তাইজুলের ঘুর্ণিতে উইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয়েছে ১৮৫ রানে। বাংলাদেশ জ্যামাইকা টেস্ট জিতেছে ১০১ রানে। ২০০৯ সালের পর প্রথম অর্থাৎ ১৫ বছর পর ক্যারিবিয়ান মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ।
এই নিয়ে তাইজুল ইসলাম তার ক্যারিয়ারে ১৫তম বার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন। স্যাবাইনা পার্কে ৫০ রানে ৫ উইকেট নেন তাইজুল। উইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয়বার টেস্ট ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট পেলেন তাইজুল। দারুণ পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরাও হন এই স্পিনার। দ্বিতীয় ইনিংসে দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ ও তাসকিন আহমেদ। বাকি ১ উইকেট নিয়েছেন প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পাওয়া নাহিদ রানা।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ১৬৪ রানে অলআউট হলেও স্বাগতিকদের ১৪৬ রানে আটকে দিয়ে ১৮ রানের লিড পায়। দ্বিতীয় ইনিংসে জাকের আলীর ৯১, সাদমানের ৪৬ ও মিরাজের ৪২ রানে ভর করে বাংলাদেশ ২৬৮ রানের পুঁজি পায়। তাতে ২৮৭ রানের টার্গেট দাঁড়ায় উইন্ডিজের সামনে।
বাংলাদেশের দেয়া ২৮৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ক্যারিবীয়দের। ১ উইকেটে ২৩ রান করে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লাঞ্চের আগে শেষ বলে তাইজুলের বলে শর্ট লেগে শাহাদাত হোসেন দিপুর হাতে ক্যাচ দেন মিকাইল লুইস। এক পা এগিয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন লুইস। বল তার ব্যাটে লেগে জুতো ছুঁয়ে ক্যাচ হয়ে যায়। শুরুতে আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে লুইসকে ফেরায় বাংলাদেশ।
বিরতি থেকে ফিরে এসে কেসি কার্টিকে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেছেন তাসকিন। এরপর ক্যারিবীয়দের হাল ধরেন অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও কেভাম হজ। এই দুইজনে ৩৫ রান যোগ করেন। হাফ সেঞ্চুরির আগেই ব্র্যাথওয়েটকে নিজের শিকার বানান তাইজুল। এই বাঁহাতি স্পিনারের বলে স্লিপে মেহেদী হাসান মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ৪৩ রান করা ব্র্যাথওয়েট।
আরেক ক্যারিবীয় ব্যাটার অ্যালিক আথানেজকে বোল্ড করে ফেরান তাইজুল। বাঁহাতি এই স্পিনারের টসড আপ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন ৫ রান করা এই ব্যাটার। এরপর অবশ্য হজ ও জাস্টিন গ্রিভস মিলে চা বিরতি পর্যন্ত ক্যারিবিয়দের টেনে তোলার চেষ্টা করেন। বিরতির পর আবারও ক্যারিবীয় শিবিরে আঘাত হানেন তাইজুল। তিনি হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়া হজকে এলবিডব্লিউ করে আউট করেন। ৭৫ বলে ৫৫ রান করে ফেরেন এই ব্যাটার। তৃতীয় সেশনে প্রথমবার বল হাতে নিয়ে দ্বিতীয় বলেই উইকেট তুলে নেন তাসকিন। বোল্ড করে ফেরান গ্রিভসকে (৪৫ বলে ২০ রান)। এরপর ফাইফার তুলে নিতে বেশি সময় নেননি তাইজুল। তিনি এলবিডব্লিউ করে ফিরিয়ে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান জশুয়া দা সিলভাকে (১৮ বলে ১২ রান)।
কিছু সময় পর তাসকিনকে বদলে হাসান মাহমুদের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মিরাজ। বল করতে এসেই প্রথম বলে আলজারি জোসেফকে বোল্ড (২১ বলে ৫ রান) করে ফেরান হাসান। এরপর তিনি কেমার রোচকেও এলবিডব্লিউ বানিয়ে আউট করেন। রিভিউ নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে আম্পায়ার্স কলের কারণে সেই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের পক্ষে আসে। ক্যারিবীয়দের শেষ ব্যাটার শামার জোসেফকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন নাহিদ রানা। জ্যামাইকা টেস্ট জেতায় সিরিজ ১-১ এ ড্র হলো।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়