২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ইতিবাচক হোক

বাংলাদেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ে আলোচনায় অংশ নিতে গত সোমবার সকালে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। সন্ধ্যায় তিনি নয়াদিল্লি ফিরে যান। ঢাকা সফরকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। যাওয়ার আগে যে বার্তা দিয়েছেন তার সারকথা হলো, বাংলাদেশের জনগণকে গুরুত্ব দিয়ে এবং জনগণকে নিয়ে এ দেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক চায় ভারত। নতুন সরকারের সঙ্গে এটাই প্রথম পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক। নয়াদিল্লি ফিরে যাওয়ার আগে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি সাংবাদিকদের বলেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তার ঢাকায় আসা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমাদের মধ্যে খোলামেলা ও গঠনমূলক মতবিনিময় হয়েছে। আমাদের আকাঙ্ক্ষা ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক ও লাভজনক সম্পর্ক, যা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমরা অতীতে দেখেছি এবং আমরা ভবিষ্যতেও এটা দেখতে চাই।’
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত হচ্ছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সব সময় উষ্ণ ও কার্যকর। আর তার সুবিধা পাচ্ছে উভয় দেশ। অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে চলছে উভয় দেশই। এই সফরের মধ্য দিয়ে ভারতের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব প্রতিফলিত হয়েছে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আজ একটি কার্যকর আন্তরিকতার পর্যায়ে এসেছে। উভয় দেশ এখন উপলব্ধি করে, ভৌগোলিক অবস্থান শুধু নয়, ঐতিহাসিক সূত্রেই উভয় দেশের সহযোগিতা একান্ত অপরিহার্য। বাংলাদেশ ও ভারত প্রতিবেশী দেশ। এ দুই দেশের রয়েছে অভিন্ন ইতিহাস। রয়েছে অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও কৃষ্টির এক মেলবন্ধন। সবার ওপরে আছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই দেশের মানুষের মধ্যে রক্তের যে বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে, তার অবিচ্ছেদ্য সংযোগ। কূটনীতি বলে, পেছন দিকে না তাকিয়ে সামনের দিকে চলতে হয়। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বর্তমানের শিক্ষা লাভ করলে তার ভিত্তিতে ভবিষ্যতের চলার পথ মসৃণ হয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখন সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। সীমান্ত ও ছিটমহল সমস্যা, সমুদ্রসীমা নির্ধারণসহ বড় বড় সমস্যার সমাধান হয়েছে। ভূ-রাজনীতির সমীকরণে দুই দেশের অবস্থান নিয়েও বড় ধরনের কোনো সমস্যা নেই। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতির মূল্যায়ন করলে যে কেউ বুঝতে পারবেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের জায়গাটা দুই দেশের নিরাপত্তা, উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য কতটা জরুরি। বাংলাদেশ সব সময় প্রতিবেশী হিসেবে ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরো উন্নত ও কার্যকর হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়