রাজধানীসহ সারা দেশেই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যের কথা স্বীকার করছে পুলিশও। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, চাঁদাবাজির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এ কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। এ অবস্থায় রাজধানীতে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। চাঁদাবাজি বন্ধ করতে চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দু-তিন দিনের মধ্যে তালিকা ধরে গ্রেফতার করা শুরু হবে। চাঁদাবাজি করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি। গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর মানুষ আশা করেছিল, এবার চাঁদাবাজির অবসান হবে। কিন্তু বাস্তবচিত্র খুবই হতাশাজনক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ দুঃখ করে বলেছেন, ‘দেশে এখনো চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, শুধু চাঁদাবাজ পরিবর্তন হয়েছে।’ গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, রাজধানীর গুলিস্তানসংলগ্ন কাপ্তানবাজার থেকে জুরাইনে চলাচল করে ৭০ থেকে ৮০টি লেগুনা। ৫ আগস্টের পর মাস দুয়েক চাঁদাবাজি বন্ধ ছিল। এখন আবার শুরু হয়েছে। প্রতিদিন প্রতিটি লেগুনায় ৩০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। শুধু লেগুনা নয়, অন্যান্য যানবাহনেও চলছে চাঁদাবাজি। রাজধানীতে খাদ্যপণ্যসহ অন্যান্য পণ্য পরিবহনকারী ট্রাককেও চাঁদা দিতে হয়। ফুটপাতে দোকান বসানোর জন্য চাঁদা দিতে হয়। পাড়া-মহল্লায় গৃহস্থালি বর্জ্য বহনকারীদেরও চাঁদা দিতে হয় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়। স্থায়ী দোকান, হাটবাজারেও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে যৌথ বাহিনী এমন অনেককে আটকও করেছে। রাজধানীর বাইরে অন্যান্য শহর, এমনকি গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে চাঁদাবাজি। নতুন আরেক ধরনের চাঁদাবাজিও চলছে এখন। হত্যাসহ নানা অভিযোগে কয়েক শ মানুষকে আসামি করে মামলা দেওয়ার পর আসামিদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে বলেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়। ৫ আগস্টের আগে চাঁদাবাজি করতেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, এখন সেই স্থান দখল করেছেন অন্য দু-একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। অর্থাৎ চাঁদাবাজির হাতবদল হয়েছে মাত্র। আর এই চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। আবার চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করতে গিয়েও হতাহতের ঘটনা ঘটছে। গত ৩০ অক্টোবর রাতে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করতে গিয়ে হাসান হাওলাদার নামের এক লেগুনাচালক নিহত হন। আমরা আশা করি, রাজধানীসহ দেশব্যাপী চাঁদাবাজদের দমনে পুলিশ কঠোর ভূমিকা পালন করবে।
ভয়াবহ চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন
Previous article
Next article
আরো দেখুন
বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে কমিশনের প্রতিবেদন
আজ থেকে ১৬ বছর আগে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের নামে ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকার পিলখানায় সদর দপ্তরে...
খুলনায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আনাগোনা ও হত্যাকান্ডে উদ্বিগ্ন রাজনৈতিক নেতারা
খুলনা প্রতিনিধি
খুলনায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। সাধারণ মানুষও রয়েছেন আতঙ্কে। বিশেষ আগামী সংসদ নির্বাচনে যারা প্রার্থী হচ্ছেন...

