১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

সেলাই মেশিন তাদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দু মুঠো মুখে খাবার জোগাড় হতে পারে

জি এম ফারুক আলম, মণিরামপুর
বছর কয়েক আগে দর্জি প্রশিক্ষণ নিলেও সেলাই মেশিন কেনার সামর্থ না থাকায় কাজ করতে পারেননি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ নেতাদের দ্বারে ধর্না দিয়েও মেলেনি সেলাই মেশিন। অথচ একটি সেলাই মেশিন তার জীবনের মোড় কিছুটা হলেও ঘুরিয়ে দিতো পারতো। দু’বেলা-দু’মুঠো মুখে খাবার জোগাড়ের ব্যবস্থা হতো বলে বিশ্বাস। আজ সেলাই মেশিন পেয়ে সেই আক্ষেপ দুর হয়েছে। একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে কথাগুলো বলছিলেন মণিরামপুর পৌর এলাকার বিজয়রামপুর গ্রামের বিধবা নারী রীনা খাতুন। তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে অমোঘ কালো মেঘে ঢাকা চরম দুঃস্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, বছর দশেক আগে দুই শিশু সন্তানকে রেখে পরপারে পাড়ি জমান পেশায় প্রান্তি কৃষক স্বামী নূর ইসলাম। দুর্ঘটনায় পায়ে ক্ষত হওয়ায় সেখানে পচন (গ্যাংরিন) ধরে। আত্বীয়-স্বজন ও এনজিও থেকে ঋন নেয়াসহ শেষ সম্বল বিক্রি করে স্বামীর চিকিৎসায় ব্যয় করলেও বাঁচানো যায়নি। দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে অর্ধহারে-অনাহারে দিন কাটিয়েছেন। দুই সন্তানের মধ্যে মেয়েকে মাদ্রাসায় পড়িয়ে বিয়েও দিয়েছেন। ছেলেটাও মাদ্রাসায় পড়তো। কিন্তু সংসারের অভাবের তাড়োনায় মাদ্রাসা পড়া শেষ না করেই বছর দুয়েক আগে ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করে। শুধু রীনা খাতুন নয়; আরও প্রায় ৪০জন অসহায় নারীকে সেলাই মেশিন দেয়া হয়। সবার চোখে-মূখে দিন বদলের স্বপ্ন। সেলাই মেশিন হতে অর্জিত অর্থ সংসারে বাড়তি আয়ের উৎস হবে বলে এসব অসহায় নারীদের বিশ্বাস। সোমবার সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব প্রয়াত মুফতী ওয়াক্কাস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে স্বাবলম্বী প্রকল্পের আওতায় অসহায় নালীদের মাঝে এই সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা রশীদ আহমাদ বিন ওয়াক্কাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না। মুফতী আবু বকর সিদ্দীকের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী, প্রেসক্লাবের সভাপতি মজনুর রহমান, সমাজসেবা কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমি আক্তার, সমবায় অফিসার তরিকুল ইসলাম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের সদস্য মুফতী আশফাকুল আনোয়ার ইয়ামিন, মাওঃ বরকতুল ইসলাম, মাওঃ হাসান আল মামুন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশে, উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আজিজুর রহমান, সাধারন সম্পাদক প্রকৌশলী আজহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ হোসেন, ছাত্রনেতা এস এম মারুফ হোসেন, তাকওয়া ফাউন্ডেশন যশোর জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক নাসিম খান, মাহমুদুল হাসান, সামছুজ্জমান প্রমূখ। ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা রশীদ আহমাদ বিন ওয়াক্কাস জানান, দানশীল ব্যক্তিদের অর্থায়নে ফাউন্ডেশন আর্তমানবেতার সেবায় কাজ করে আসেছে। সম্প্রতি বন্যাকবলিত সিলেট ও ফেনিতে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ত্রান কার্যক্রমসহ স্থানীয় বানভাসি মানুষের পাশে দাড়িয়েছে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়