২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

সংকটে শিল্প

যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি নির্ভর করে শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে অনেক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা করার সুযোগ সীমিত হয়ে গেছে। এর সঙ্গে নতুন নতুন প্রতিকূলতা এবং একের পর এক সংকট ও অভিঘাতে ধুঁকছে অনেক শিল্প খাত। দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাবে নির্মাণকাজের প্রধান উপকরণ রড বিক্রিতে ধস নেমেছে। আগের তুলনায় রডের দাম কমলেও বিক্রি কমেছে ৭০ শতাংশ। বিক্রি কমে যাওয়ায় উৎপাদন কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে স্টিল উৎপাদনকারী কম্পানিগুলো। শুরুতে চাহিদা কমে যাওয়ায় রডের দাম অনেকটাই কমে এলেও এখন ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে কাঁচামাল আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় টনপ্রতি পাঁচ-ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দেশের চলমান পরিস্থিতি ও ড্যাপের কারণে আবাসন খাতে বেচাকেনা এবং নতুন প্রকল্পও কমে গেছে। ফলে রডের বিক্রি ব্যাপকভাবে কমেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ দুই খাতের বেশির ভাগ উদ্যোক্তা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। উদ্যোক্তারা বলছেন, রাজনৈতিক সংকটের দ্রুত সমাধান না হলে এবং সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলো পুনরায় শুরু না হলে স্টিলশিল্প দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। সিমেন্ট খাত নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্মাণকাজের প্রধান উপকরণ সিমেন্ট বিক্রিতে নেমেছে ধস। দোকানগুলোতে গত পাঁচ মাস আগের তুলনায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সিমেন্ট বিক্রি কমেছে। বিক্রি কমে যাওয়ায় উৎপাদন কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে কম্পানিগুলো। কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাত নিয়ে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, এই খাতের রপ্তানি বাড়াতে পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। এই খাতের বাজার সম্প্রসারণে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা আছে। সম্প্রতি বর্ধিত ট্যাক্স-ভ্যাট নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। দেশে সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৪০টি। এর মধ্যে বর্তমানে উৎপাদনে রয়েছে ৩০টি কম্পানি। প্রতিবছর প্রায় চার কোটি টন সিমেন্ট চাহিদার বিপরীতে প্রায় সাত কোটি ৮০ লাখ টন উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে এই কম্পানিগুলোর। রাজনৈতিক সংকটের দ্রুত সমাধান না হলে এবং সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলো পুনরায় চালু না হলে সিমেন্ট খাত দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। কৃষি প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, এই খাতের বাজার সম্প্রসারণে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা আছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত ও অ্যাক্রেডিটেড ল্যাবের অভাব, গ্রহণযোগ্য সনদ প্রদানে দীর্ঘসূত্রতা, কোল্ড চেইন সিস্টেমের অনুপস্থিতি, উপকরণ আমদানিতে উচ্চশুল্ক, এলসি সমস্যা, জ্বালানি সমস্যা খাতটির বিকাশের অন্যতম অন্তরায় হিসেবে দেখছেন উদ্যোক্তারা। বর্ধিত ট্যাক্স-ভ্যাট নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নির্ভর করে শিল্পের উন্নয়নের ওপর। বাংলাদেশ এখন শিল্পে অনেক এগিয়েছে। এখন বাজার সম্প্রসারণ ও স্থিতিশীলতা না ফিরলে শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কাজেই আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়