৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

মিমি আক্তারের মেডিকেলে ভর্তি দারিদ্রতার কষাঘাতে বন্দি

রেজাউল করিম, লোহাগড়া
সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মিমি আক্তার। কিন্তু অর্থাভাবে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়েছেন মিমি ও তাঁর পরিবার । তাঁর বাবা দিনমজুর। খেয়ে না খেয়ে সংসার চলে তাঁদের। এই বাস্তবতায় মেডিকেল কলেজে ভর্তির খরচ বহন ও পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া অসম্ভব। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামে মিমি আক্তারের বাড়ি । তাঁর বাবার নাম আফসারউদ্দিন সরদার। মা শিউলি বেগম।তিন ভাই বোনের মধ্যে মিমি বড়। মিমি স্থানীয় নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি ও দিঘলিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। এবার মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে নোয়াগ্রামে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় পরিবারের সঙ্গে। ছোট এক খণ্ড জমিতে তাঁদের পৌত্রিক বসতভিটা। সেখানে দুটি ছোট টিনের ঘর। এক ঘরে একটি কক্ষ ও বারান্দা, আরেক ঘরে একটি কক্ষ। রাতে খোলা বরান্দায় থাকেন বাবা ও মা। ঘরে থাকেন দুই বোন। মিমি আক্তার বলেন,ছোট বেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হব। কিন্তু সাইন্সে পড়লে অনেক খরচ। তারপরও ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে স্কুল-কলেজের স্যারদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় পড়েছি। মা বলতেন পড়াশোনই তোমাদের প্রধান হাতিয়ার। মা-বাবার বড় সন্তান আমি। তাঁদের মুখের দিকে তাকিয়ে পড়েছি। এখন মেডিকেলে ভর্তি হওয়া ও পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নেওয়া পরিবারের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই ভর্তি হতে পারব কি না সেই দুশ্চিন্তায় আছি। মিমির পিতা আফসারউদ্দিন সরদার বলেন, সবদিন কাজ পাওয়া যায় না। বাড়ির মধ্যে ছোট ছোট কিছু কাঠের গাছ ছিল, সংসার চালাতি তা বিক্রি করে দিছি। শুনলাম, মেডিকেলে ভর্তি হতি ২৫ হাজার টাকা লাগবি। দুডে দেবদার গাছ আছে, তা বিক্রির জন্য খরিদ্দার দেখাইছিলাম। ১২ হাজার টাকা বলিছে। ভর্তিতে আরও ১৩ হাজার লাগবি। ভর্তি করেও বা কিভাবে খরচ চালাব ? তাই ভর্তি করতি পারব কি না, পড়াতি পারব কি না তাই ভাবছি। নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন বলেন, মিমি খুব পড়ুয়া মেয়ে। স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের সহযোগিতায় তাঁর পড়াশোনা চলেছে। কিন্তু মেডিকেলে তো অনেক খরচ। সব মিলে ওই পরিবারের পক্ষে পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। সুযোগ পেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করার মতো মেধাবী মেয়েটি। তাঁর পড়াশোনার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসা দরকার।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়