১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস ডে আজ ভালোবাসা দিবস

সুন্দর সাহা
হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস ডে। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ব ভালবাসার দিন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আজ। প্রেম-ভালোবাসায় মাতোয়ারা হওয়ার দিন। ফাগুনের মাতাল হাওয়ায় আজ ভেসে যাবে প্রেমপিয়াসী তরুণ-তরুণী, ভালোবাসার রঙে রঙিন হবে হৃদয়। মনের যত বাসনা, যত অব্যক্ত কথা ডালপালা মেলে ছড়াবে আজ বসন্তের মধুর হাওয়ায়। তবে শুধু তরুণ-তরুণী নয়, সব বয়সের মানুষের ভালোবাসার বহুমাত্রিক রূপ প্রকাশের আনুষ্ঠানিক দিন আজ। ইতিহাসবিদদের মতে, দুটি প্রাচীন রোমান প্রথা থেকে এ উৎসবের সূত্রপাত। এক খ্রিস্টান পাদ্রি ও চিকিৎসক ফাদার সেন্ট ভ্যালেনটাইনের নামানুসারে দিনটির নাম ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’ করা হয়। ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি খ্রিস্টানবিরোধী রোমান সম্রাট গথিকাস আহত সেনাদের চিকিৎসার অপরাধে সেইন্ট ভ্যালেনটাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। মৃত্যুর আগে ফাদার ভ্যালেনটাইন তার আদরের একমাত্র মেয়েকে একটি ছোট্ট চিঠি লেখেন, যেখানে তিনি নাম সই করেছিলেন ‘ফ্রম ইউর ভ্যালেনটাইন’। সেন্ট ভ্যালেনটাইনের মেয়ে এবং তার প্রেমিক মিলে পরের বছর থেকে বাবার মৃত্যুর দিনটিকে ভ্যালেনটাইনস ডে হিসেবে পালন করা শুরু করেন। যুদ্ধে আহত মানুষকে সেবার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সেন্ট ভ্যালেনটাইনকে ভালোবেসে দিনটি বিশেষভাবে পালন করার রীতি ক্রমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ভিন্ন মত অনুযায়ী সেইন্ট ভ্যালেনটাইন একজনকে ভালোবেসেছিলেন। চিঠিটি লিখেছিলেন তার কাছেই। ভ্যালেনটাইনস ডে সবর্জনীন হয়ে ওঠে আরও পরে প্রায় ৪০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে। দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাওয়ার পেছনে রয়েছে আরও একটি কারণ। সেন্ট ভ্যালেনটাইনের মৃত্যুর আগে প্রতি বছর রোমানরা ১৪ ফেব্রুয়ারি পালন করত ‘জুনো’ উৎসব। রোমান পুরানের বিয়ে ও সন্তানের দেবি জুনোর নামানুসারে এর নামকরণ। এদিন অবিবাহিত তরুণরা কাগজে নাম লিখে লটারির মাধ্যমে তাদের নাচের সঙ্গীকে বেছে নিত। ৪০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে রোমানরা যখন খ্রিস্ট ধমার্বলম্বীতে পরিণত হয় তখন ‘জুনো’ উৎসব আর সেন্ট ভ্যালেনটাইনের আত্মত্যাগের দিনটিকে একই সূত্রে গেঁথে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’ হিসেবে উদযাপন শুরু হয়। কালক্রমে এটি সমগ্র ইউরোপ এবং ইউরোপ থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এ ভালোবাসা যেমন মা-বাবার প্রতি সন্তানের, তেমনি মানুষে-মানুষে ভালোবাসাবাসির দিন। কিন্তু বাংলাদেশে কীভাবে এই দিবস। জানা যায়, ১৯৯৩ সালের দিকে আমাদের দেশে ভালোবাসা দিবসের আবির্ভাব ঘটে। সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব শফিক রেহমান পড়াশোনা করেছেন লন্ডনে। পাশ্চাত্যের রীতিনীতিতে তিনি ছিলেন অভ্যস্ত। দেশে ফিরে তিনিই ভালোবাসা দিবসের শুরুটি করেন। এ নিয়ে অনেক ধরনের মতবিরোধ থাকলেও শেষ পর্যন্ত শফিক রেহমানের চিন্তাটি নতুন প্রজন্মকে বেশি আকর্ষণ করে। সে থেকে এই আমাদের দেশে দিনটির শুরু। বছর ঘুরে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটি আমাদের ভালোবাসায় রাঙিয়ে গেলেও, ভালোবাসা কিন্তু প্রতিদিনের। জীবনের গতি নির্ধারণ করে ভালোবাসা। মানুষ বেঁচে থাকে ভালোবাসায়।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়