১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

৩৭১ পদ খালি, ব্যাহত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা

প্রতিদিনের ডেস্ক:
প্রয়োজনীয় লোকবল ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা না থাকায় চাঁদপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সহকারী পরিচালক, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, মেডিক্যাল কর্মকর্তা, সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, সহকারী পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা, কমিউনিটি মেডিক্যাল কর্মকর্তা, ফার্মাসিস্ট ও পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা না থাকায় সেবা পাচ্ছেন না প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর লোকজন। বিশেষ করে জরুরি প্রসূতিসেবা ও জন্মনিরোধের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে জেলা সদরে যেতে হয় নারীদের।জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় অনুমোদিত এক হাজার ৬৮ পদের বিপরীতে আছেন ৬৯৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী। ৩৭১টি পদ শূন্য পড়ে আছে। নানা জটিলতায় ঝুলে আছে নিয়োগ প্রক্রিয়া। বর্তমানে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, মেডিক্যাল কর্মকর্তা, সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল কর্মকর্তা, পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা, পরিবারকল্যাণ সহকারীসহ শূন্য রয়েছে ৩৭১ পদ। জনবল সংকটের কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিবার পরিকল্পনাসেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে অনুমোদনকৃত দুই সহকারী পরিচালক পদের মধ্যে দুটিই শূন্য, আট উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার মধ্যে নেই চার জন, মেডিক্যাল কর্মকর্তা ১৮ পদের আটটি শূন্য, সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আট জনের বিপরীতে আছেন একজন, সহকারী পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তার সাত পদের মধ্যে নেই একজনও, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল কর্মকর্তা ৫৩ জনের মধ্যে ৩৭টি শূন্য, ২২ ফার্মাসিস্টের মধ্যে ১২টি পদ শূন্য, পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা নেই ৭৯ জন ও পরিবারকল্যাণ সহকারী নেই ১২৯ জন। এ ছাড়া অফিস তত্ত্বাবধায়ক, অফিস সহকারী-কম্পিউটার অপারেটর, পরিসংখ্যান সহকারী, কার্যালয়ের চালক, নিরাপত্তাপ্রহরী ও আয়াসহ বিভিন্ন পদ শূন্য আছে।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চাঁদপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক আবুল কাশেম মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌‘শূন্য পদগুলো পূরণের একটি প্রক্রিয়া আছে। পদগুলো শূন্য হওয়ার পর ওই তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওসব পদে জনবল নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরপর আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম। এর মধ্যে পরীক্ষায় অস্বচ্ছতার অভিযোগে পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণার্থী মনোনয়নপ্রক্রিয়া বাতিলসংক্রান্ত গত ১৪ জানুয়ারির বিজ্ঞপ্তির বৈধতা নিয়ে পৃথক চারটি রিট করেন কয়েকজন প্রার্থী। এতে নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে যায়। সবশেষ গত ১৫ ডিসেম্বর পরিদর্শিকার এক হাজার ৮০টি পদে প্রশিক্ষণার্থী মনোনয়নে নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রায় পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে নতুন করে নির্দেশনা আসার পর মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে।’অন্যান্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া একটু ধীরগতিতে চলছে উল্লেখ করে আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশনা পাইনি। এ ছাড়া চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন মোবাইল অপারেটর কোম্পানি টেলিটকের মাধ্যমে হয়। অনলাইনে আবেদনপত্র গ্রহণের জন্য এখনও টেলিটক কোম্পানি তাদের সার্ভার চালু করেনি। নিয়োগের আবেদনের জন্য সারা দেশে তাদের সার্ভার প্রস্তুতকরণের কাজ চলছে বলে জেনেছি। তাদের সার্ভার ঠিক হলে আমরা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারবো।’এ বিষয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে শূন্য পদে নিয়োগের ব্যাপারে আমার কাছে এখনও কোনও প্রস্তাব উপস্থাপন করেননি কার্যালয়ের উপপরিচালক। তাদের কার্যালয়ে শূন্য পদে নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর আমার কাছে এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়