শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত সর্বত্রই মাদকের ছোবল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তরুণরা তো বটেই, কিশোর-কিশোরীরাও মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। এর প্রধান কারণ মাদকের সহজলভ্যতা। হাত বাড়ালেই মাদক পাওয়া যায়। অন্যদিকে মাদকের অর্থ সংগ্রহের জন্য মাদকাসক্তরা নানা অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। দৈনিক প্রতিদিনের কথার ধারাবাহিক প্রতিবেদনে মাদকের বিস্তার ও অপরাধ ঊর্ধ্বগামী হওয়ার এক ভয়ংকর চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর শিথিলতার সুযোগ নিয়ে মাদক কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রায় প্রকাশ্যেই চলে কেনাবেচা। তাই মাদকাসক্তের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কয়েক মাসে মাদকসেবীর সংখ্যা অন্তত ২০ লাখ বেড়েছে। সেই সঙ্গে মাদক কারবারে অর্থপাচারও বাড়ছে। মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) তথ্য মতে, দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়ে এখন দেড় কোটির কাছাকাছি। সংস্থাটির প্রধান ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের গবেষণা বলছে, করোনার সময় থেকে মাদকসেবীর সংখ্যা বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। গত কয়েক মাসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর শিথিলতার কারণে ২০ লাখের মতো মাদকসেবী বেড়েছে। আমরা বলছি, দেশে বর্তমানে প্রায় দেড় কোটি মাদকসেবী রয়েছে।’ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) এক প্রতিবেদনে অনুযায়ী, দেশে সামাজিক অবক্ষয় এবং বহু রকম অপরাধের পেছনে অন্যতম অনুঘটকের কাজ করছে মাদকাসক্তি। তাদের মতে, মাদকাসক্তদের প্রায় ৯০ শতাংশই কিশোর-তরুণ। মাদক ব্যবসার গডফাদাররা খুন, অপহরণ ও চাঁদাবাজিতে এই কিশোর-তরুণদের ব্যবহার করে। ২০২৩ সালের জুনে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা আংকটাড (ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, প্রতিবছর শুধু মাদকের কারণে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় মূল্যে পাঁচ হাজার ৮৪১ কোটি টাকারও বেশি) পাচার হয়ে যায়। মাদক ব্যবসার মাধ্যমে অর্থপাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম এবং এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দেখা গেছে, সারা দেশে অনেক জায়গায়ই নিয়মিত মাদকের হাট বসে। রাজধানীতেও বেশ কিছু স্পটে মাদক বিক্রি হয়। অভিযোগ আছে, পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবৈধ যোগসাজশেই সেগুলো পরিচালিত হয়। কথিত ‘সোর্সের’ মাধ্যমে বিরাট অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অবৈধ যোগসাজশের কারণেই মাদকের কারবার বিস্তার লাভ করছে। আরেকটি বড় কারণ সীমান্ত পেরিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদক আসা রোধ করতে না পারা। পাশাপাশি মাদক মামলার বিচারের দীর্ঘসূত্রতা, তদন্তের দুর্বলতা, জামিন পেয়ে কারবারিদের পুনরায় কারবারে নামা মাদকের বিস্তারে ভূমিকা রাখছে বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর ও সমন্বিত কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। মাদকের অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। গডফাদারসহ ছোট-বড় সব কারবারিকে আইনের আওতায় আনতে হবে। মাদকসেবীদের চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। বিচারকাজের দীর্ঘসূত্রতা দূর করতে হবে।
মাদকের ভয়াবহ বিস্তার
আরো দেখুন
খুবিতে আন্তঃডিসিপ্লিন শর্টপিচ নাইট ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ট্রফি উন্মোচন
খুবি সংবাদদাতা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট এসোসিয়েশন আয়োজিত আন্তঃডিসিপ্লিন শর্টপিচ নাইট ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ট্রফি উন্মোচন করা হয়েছে। ২৮ এপ্রিল (সোমবার) সন্ধ্যা ৬টায় প্রধান অতিথি হিসেবে ট্রফি...
খুবিতে ‘ফান্ডামেন্টাল্স অব রিসার্চ মেথডোলজি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ
খুবি সংবাদদাতা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা (ইউআরপি) ডিসিপ্লিন এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কাউন্সিলের যৌথ উদ্যোগে ‘ফান্ডামেন্টাল্স অব রিসার্চ মেথডোলজি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ...